ঘি এর উপকারিতা

ঘি একটি উপকারী খাবার। ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে  জানতে হলে আমাদের এই লিখাটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন ধরনের খাবারের স্বাদ- গন্ধ বৃদ্ধিতে এবং খাবারকে সুস্বাধু করতে ঘি এই ভারতীয় উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী রান্নায় বহুদিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে।

খাদ্য হিসাবে ঘি এর ব্যবহার

দক্ষিণ ভারতের ঐতিহ্যবাহী খাবার ‘দোসা’ ঘি সহযোগে পরিবেশিত হয়। ঘি এর কদর ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্রই। বাংলার বহু ধরনের রান্নায় ঘি ব্যবহৃত হয়ে খাদ্যরসিক বাঙ্গালির রসনার তৃপ্তি মিটিয়ে আসছে। ঘি পোলাও বা বিরিয়ানিতে একটি অত্যাবশ্যক উপকরণ। চমৎকার গন্ধের জন্যে নানান রকম ভর্তা ও ভাজিতেও ঘি ব্যবহৃত হয়। ভারতের পঞ্জাবের রেস্তোরা গুলোতে সেখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবার তৈরিতে ঘি এর বিপুল ব্যবহার হয়ে আসছে। আবার উন্নতমানের হোটেলে নান রুটি ও তৈরির পর এর ওপর ঘি এর প্রলেপ দেওয়া হয়, যা রুটির স্বাদকে দ্বিগুণ করে তুলে। বিভিন্ন রকম মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার প্রস্তুতিতে ঘি ব্যবহৃত হয়।

ঘি তৈরির উপকরণ

গরু বা মহিষের দুধ থেকে ঘি তৈরি করা হয়। ঘি বা মাখন কয়েকটি পদ্ধতিতে তৈরি করা যেতে পারে। ঘি সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটি খাবার হিসেবে পরিচিত। ঘি তে রয়েছে পুষ্টি উপাদান যা আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখে।

ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে সকলের জেনে রাখা প্রয়োজন। তবে শুধু কি এর উপকারিতা সম্পর্কেই তো জানলে হবে না ঘি খাওয়ার নিয়ম, প্রতিদিন ঘি খাওয়ার উপকারিতা,গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা ইত্যাদি বিষয়ে আপনাকে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। তাহলে দেরি কেন আসুন জেনে নি ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত…

ঘি এর উপকারিতা

ডালঢা বা ঘি কে সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঘি কে আয়ুর্বেদে ঔষধি হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে ঘি এমনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম্মে ঘি এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত উপস্থাপন করা হলো:

হজমের জন্য উপকারী:

ঘি হজমের জন্য বেশ উপকারী। ঘি কে হজমের জন্য সেরা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ঘি পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহ কমাতে ও লুব্রিকেট করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঘি স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে যার ফলে আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। যাদের বমি বমি ভাব,কোষ্ঠকাঠিন্য, ফোলাভাব আছে, বদহজম আছে তারা প্রতিদিন ঘি খাওয়ায় এই সমস্যা থেকে সমাধান পেতে পারেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:

ঘিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। ঋতু পরিবর্তনের সময় যে সর্দি কাশি জ্বর হয়ে থাকে, এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রতিনিয়ত ঘি খেতে হবে। এছাড়া ঘি এলার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

স্মৃতিশক্তি বাড়ায়:

ঘি স্মৃতিশক্তিকে তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে। এছাড়া স্মৃতিশক্তি,একাগ্রতা,ফোকাস ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বা দক্ষতা বৃদ্ধি করে।

ভিটামিন সমৃদ্ধ:

ঘি হওয়া ভিটামিন সমৃদ্ধ। এঙ্গিতে ভিটামিন A,D,E,K2 রয়েছে। এর ফলে আমাদের শরীরে হাড় মজবুত হয়, কোষকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এছাড়া দাঁত ও হাড় ক্যালসিয়াম পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

আয়রন সমৃদ্ধ:

ঘি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। ঘি চুল, ত্বক, হাড়ের স্বাস্থ্যকর অবস্থা বজায় রাখে সকল ঋতুতে।
রক্তশূন্যতা থেকে রক্ষা করে ঘি।

গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা

আমাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যারা গরম ভাতে ঘি খেয়ে থাকেন কিন্তু অনেকেই জানেন না গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা এ সম্পর্কে। নিন্মে গরম ভাতে ঘি খাওয়ার উপকারিতা উপস্থাপন করা হলো:

  • শক্তি বৃদ্ধি করে
  • পানির অভাব দূর করে
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
  • ​হজমক্ষমতা ভালো রাখে
  • রোগ প্রতিরোধ বৃদ্ধি করে

প্রতিদিন কতটুকু ঘি খাওয়া উচিত

প্রতিটি মানুষের প্রতিদিন ৩চা চামচ থেকে ৬চা চামচ খাওয়া উচিত। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে,একবারে তিন চা চামচ থেকে ছয় চা চামচ পর্যন্ত ঘি না খেয়ে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবারের সাথে ঘি খাওয়া ভালো।

FAQ

ঘি খেলে কি মোটা হয়ে যায়?
উওর: না, ঘি খেলে মোটা হয়না বরং ঘি খেলে পেটের চর্বি কমে ও ওজন কমে।

১ কেজি ঘি এর দাম কত?
উওর: বর্তমানে ১ কেজি ঘি এর দাম ১২০০ টাকা থেকে ১৬৮৫ টাকা।

ঘি ও মধু একসাথে খেলে কি হয়?
উওর: ঘি ও মধু একসাথে না খাওয়াই ভালো। এতে উপকারীতার চেয়ে অপকারীতা বেশি হয়। এতে বদহজম,জ্বর ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।

ঘি এর ক্ষতিকর দিক কি?
যদি শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের ও কোলেস্টেরল এর মাএা বেশি থাকে ঘি খাওয়া যাবে না।