কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজার বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত একটি উপকূলীয় শহর। এটি দীর্ঘ এবং নিরবচ্ছিন্ন বালুকাময় সৈকতের জন্য পৃথিবী বিখ্যাত, যা বঙ্গোপসাগর বরাবর একশত বিশ কি. মি. এর চেয়ে বেশি এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

ভ্রমনের জন্য কক্সবাজারের তুলনা হয় না। পর্যটকরা কিছু সময়ের জন্য একটু আরাম ও শান্তির খোঁজে বেরিয়ে পড়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এ আছে জলরাশির গর্জন, সৈকতে নরম বালুর বিছানা, সারি সারি ঝাউবন। ভিন্ন এক জগৎ উপভোগ করতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন সমুদ্র সৈকত থেকে।

ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অফিসার ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের নামে সমুদ্র সৈকতের নামকরণ করা হয়েছে, যিনি ১৯ শতকের গোড়ার দিকে পালংকি ফাঁড়ির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সৈকত এরিয়াটিতে মৃদু ঢাল আছে এবং সাঁতার কাটা এবং সূর্যস্নানের জন্য আদর্শ জায়গা। এখানকার সমুদ্র সারা বছর উষ্ণ এবং তুলনামূলকভাবে শান্ত থাকে, এটি বাংলাদেশে সহ সারা বিশ্বের পর্যটকদের কাছে একটি জনপ্রিয় গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। জেনে নেই কক্সবাজার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য।

কক্সবাজার যাবার উপযুক্ত সময় কখন

শীত-গ্রীষ্ম, বর্ষা-বসন্ত-এমন কোনো ঋতু নেই যখন সমুদ্র সৈকতের চেহারা বদলায় না। কক্সবাজার সারা বছর ভ্রমন করা যায়। কক্সবাজার ভ্রমনে যেতে হলে আপনাকে উপযুক্ত সময় বেচে নেওয়ার জন্য কিছু বিষয় চিন্তা করা উচিত। কখন জোয়ার ভাটা হয়, কখন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্ভবনা বেশি থাকে এসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কক্সবাজারে শীত মৌসুমে যাবার উপযুক্ত সময়। সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হল অক্টোবর থেকে এপ্রিল মাস। এ সময়ে কক্সবাজার হলুদ সূর্যাস্ত দেখা যায়, যা দেখে পর্যটকরা ভিন্ন স্বাদ গ্রহন করেন।

বর্ষাকালীন সময়ে কক্সবাজারে ভ্রমণ করা কঠিন হতে পারে কারণ তখন ঝড় ও সমুদ্রের তরঙ্গ বেশি থাকে। শীতকাল ছাড়া আপনি কক্সবাজার ভ্রমনে গেলে বাড়তি কিছু সুবিধা পাবেন। হোটেল ভাড়া অনেক কম হবে এবং খাবারের দাম তুলনামূলক কম থাকে। তবে পর্যটকরা বছরের যেকোনো সময় কক্সবাজারে যেতে পারেন, কারণ সমুদ্র সৈকতটি সারা বছরই দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এ কি কি করবেন

সমুদ্র সৈকতের অসাধারণ দৃশ্য
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত করা যেতে পারে নিম্নলিখিত কিছু কর্মক্রম

  • কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে নৌকা ভ্রমণ অনেক জনপ্রিয় একটি কাজ। নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে আপনি দ্বীপের চারপাশে ঘুরে দেখতে পারেন।
  • কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতে দ্বীপ সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক দৃশ্য ও সৌন্দর্য দর্শন করবেন।
  • সমুদ্রের পানিতে ঘা ভাসিয়ে দিতে পারেন। রোদ্রস্নান আপনাকে দেবে মানসিক প্রশান্তি।
  • অবশ্যই সূর্যদয় ওসূযাস্তের সময় বীচে কাঠাবেন। তাহলে আপনি সমুদ্রের পুরো রুপ উপভোগ করতে পারবেন।
  • নিজের ও পরিবারের জন্য নিজ ক্যামেরায় ছবি তুলবেন যা স্মৃতি হয়ে থাকবে। যদি ভালো ক্যামেরা না থাকে তাহলে ফটোগ্রাফারদের শরনাপন্ন হতে পারেন।
  • হিমছড়ি ঝর্ণা এবং ইনানী বীচ ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন।
  • সৈকতে বিভিন্ন ধরনের রাইডের ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলো রাইড করতে পারেন।
  • উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের সাথে স্পীডবোটের রাইডে যেথে পারেন। স্পীডবোট রাইটে ১০০ থেকে ২৫০ টাকা খরছ হতে পারে।
  • সৈকতের পাশের বার্মিজ মার্কেট থেকে কেনাকাঠা করতে পারেন।
  • তাছাড়া জিপিং ঘোড়ায় ছড়া, বাইকিং, স্পা, জিম, ফুলমুন টেরেস, প্লায়িং ইত্যাদি অনায়াসে উপভোগ করতে পারেন।

কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকতে আপনি অনেক ধরনের জীবজন্তু দেখতে পাবেন। তার মধ্যে সমুদ্র পাখি, সমুদ্র কাছুরি, চিঙ্গি, বাকসি ও বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ উল্লেখযোগ্য।

ঢাকা থেকে কিভাবে কক্সবাজার যাবেন

কক্সবাজার বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি অতি জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত। এটি দেশের রাজধানী ঢাকা শহর থেকে আনুমানিক ৪১৫ কি.মি. দূরে অবস্থিত। ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার কিছু উপায় এখানে দেওয়া হল-

বিমান দ্বারা ঢাকা থেকে কক্সবাজার: ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার সবচেয়ে দ্রুততম উপায় হল বিমান। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সহ বেশ কয়েকটি এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে কক্সবাজার নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। এসব ফ্লাইট কক্সবাজার যেথে প্রায় এক ঘন্টা সময় নেয়।

বাস দ্বারা ঢাকা থেকে কক্সবাজার: বেশ কয়েকটি বাস কোম্পানি ঢাকা থেকে কক্সবাজার নিয়মিত পরিষেবা পরিচালনা করে থাকে। ট্র্যাফিক এবং রাস্তার অবস্থার উপর নির্ভর করে কক্সবাজার ভ্রমণে প্রায় ৮-১০ ঘন্টা সময় লাগতে পারে। কক্সবাজার যাওয়ার জন্য কিছু জনপ্রিয় বাস কোম্পানির মধ্যে রয়েছে সোহাগ পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, গ্রীন লাইন পরিবহন এবং সেন্ট মার্টিন পরিবহন।

ট্রেন দ্বারা ঢাকা থেকে কক্সবাজার: ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য “মহানগর গোধূলি” নামে ১ টি ট্রেন পরিষেবা সরাসরি কক্সবাজার পর্যন্ত রয়েছে। ট্রেনের সময়সূচীর উপর নির্ভর করে কক্সবাজার যেথে প্রায় ১০-১২ ঘন্টা সময় লাগতে পারে।

ট্রেনের সময়সূচী দেখুন: আজকের ট্রেনের সময়সূচী

অন্যান্য গাড়িতে ঢাকা থেকে কক্সবাজার: ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাওয়ার জন্য আপনি একটি প্রাইভেট কার বা ট্যাক্সি ভাড়া নিতে পারেন। এসব গাড়িতে কক্সবজার যেথে ট্র্যাফিক এবং রাস্তার অবস্থার উপর নির্ভর করে প্রায় ৮-১০ ঘন্টা সময় লাগে।

আপনি যে কোন মাধ্যেমে কক্সবাজার যান না কেন তার জন্য অগ্রিম পরিকল্পনা করা, গাড়ি ভাড়া/টিকিটের মূল্য সম্পর্কে  জেনে নেওয়া  এবং আপনার টিকিট আগে থেকে বুকিং করা একান্ত আবশ্যক।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এর খাবারসমূহ 

কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি অন্যতম পর্যটন স্থান এবং এখানে বিভিন্ন ধরনের খাবার পাওয়া যায়। কক্সবাজারে বিভিন্ন ধরনের হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং স্ট্রিট ফুড ভ্যান আছে যেখানে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার পাওয়া যায়। আপনি চাইলে সেখানে খেতে পারেন।

কক্সবাজারে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হচ্ছে সম্পুর্ণ ঢাকাইয়া স্টাইলের বিরিয়ানি এছাড়াও কক্সবাজারে সম্পুর্ণ বাংলাদেশের পরিচিত ডিশ এর মধ্যে মাছের কারি সবচেয়ে জনপ্রিয়। আছে অনেক স্থানে সবজি ও দুধের প্রকৃতি থেকে তৈরি স্থানীয় খাবার

কক্সবাজারে স্ট্রিট ফুড ভ্যান থেকে বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড এবং চা-কপি জাতীয় খাবার পাওয়া যায়।

কক্সবাজারে অনেক উল্লেখযোগ্য রেস্টুরেন্ট ও হোটেল রয়েছে যেখানে আপনি মজাদার খাবার পাবেন। আপনি বাংলাদেশি, ইটালিয়ান, চীনা, ইন্ডিয়ান, থাই, মালয়েশিয়ার খাবার খেতে পারবেন। এছাড়াও আপনি নিজের চোখে দেখে নিতে পারেন, যেমন সামুদ্রিক মাছ সহ মাংস, মাছের মুড়ি, আর্কষনীয় চিংড়ি ভূনা, মিক্সড ভর্তা, রুপচাঁদা ফ্রাই, কোরাল/ভেটকি মাছ, লইট্যা ফ্রাই ইত্যাদি। ১০০ থেকে ৪০০ টাকা মধ্যে ভালো মানের খাবার পাবেন।

কক্সবাজার হোটেল ভাড়া

কক্সবাজার বাংলাদেশের প্রধান পর্যটন স্থান এবং এখানে অনেক হোটেল এবং রিসোর্ট রয়েছে। কিছু উল্লেখযোগ্য হোটেলের নাম হলো:

লঙ্গ বিচ হোটেল (Long Beach Hotel)

প্রতি রাতের জন্য রুম ভাড়া হবে ৬,৫০০/- থেকে ৪০,০০০/- পর্যন্ত।
যোগাযোগ:
14 Kalatoli, Hotel-Motel Zone,
Cox’s Bazar, Bangladesh
Mobile No: +88 01730338907, +8801755660051
Email: sales@longbeachhotelbd.com
Web: https://longbeachhotelbd.com/

সিগাল হোটেল (Seagull Hotel)

প্রতি রাতের জন্য রুম ভাড়া হবে ৫,৫০০/- থেকে ৪০,০০০/- পর্যন্ত।
যোগাযোগ:
Cox’s Bazaar, Hotel Motel Zone
Cox’s Bazaar Sea Beach
+88 01766666530. +88 01766666531 – 34
Emale: reservations@seagullhotelbd.com

প্রাইম পার্ক হোটেল (Prime Park Hotel)

প্রতি রাতের জন্য রুম ভাড়া হবে ৩,৬৫০/- থেকে ১০,০০০/- পর্যন্ত।
যোগাযোগ:
Plot No. 58, Block-C, Hotel Motel Zone
Kalatoli 4700, Cox’s Bazar, Bangladesh
Phone: +88 03 4162311
Mobile.: +880 1775 609 915, +880 1842 609 915
Email: info@primeparkbd.com

Heritage Hotel

প্রতি রাতের জন্য রুম ভাড়া হবে ৬,৫০০/- থেকে ২৬,০০০/- পর্যন্ত।
যোগাযোগ:
173-1, Bypass Road, Kolatoli Circle, Cox’s Bazar, Bangladesh.
+8801777744034
+88034152618
Emale: info@bwpheritagehotel.com

THE SEA PRINCESS HOTEL

প্রতি রাতের জন্য রুম ভাড়া হবে ৭০০০/- থেকে ১০,০০০/- পর্যন্ত।

যোগাযোগ:
Sugandha Beach, Cox’s Bazar, Bangladesh
+8801922118821
+8801613822522
Emale: info@theseaprincess.com

এছাড়া ৮০০ টাকা থেকে ভাড়া শুরু করে আরো অনেক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে, যেমন উর্মি গেস্ট হাউজ, কোরাল রীফ, ইকরা বিচ রিসোর্ট, অভিসার, মিডিয়া ইন ইত্যাদি। যেখানে আপনি অনায়াসে থাকতে পারেন। এই হোটেল ও রিসোর্টগুলোতে পর্যটকদের জন্য সকল সুবিধা উপস্থিত থাকে।

জানা আবশ্যক ও ভ্রমন টিপস

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত একটি সুন্দর পর্যটন এরিয়া, যেখানে আপনি খুব সহজে এসে থাকতে পারেন। কক্সবাজার সম্পর্কে কিছু ভ্রমন টিপস হল:

পর্যটন সম্পর্কিত তথ্য জানুন: আপনি কক্সবাজার ভ্রমণের পূর্বে পর্যটন সম্পর্কিত সকল তথ্য জেনে নিতে পারেন যেমন কক্সবাজার কোথায় অবস্থিত, সেখানে কি কি দর্শনীয় স্থান রয়েছে এবং কীভাবে যেতে হবে।

সময় পরিকল্পনা করুন: আপনি কক্সবাজার ভ্রমণের আগে সময় নির্ধারণ করে নিন যেন আপনি সমস্ত জায়গা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দেখতে পারেন।

ভ্রমন পরিকল্পনা করুন: আপনি আপনার ভ্রমন সময়ে কক্সবাজার কোন কোন স্থান দেখতে চান তা পূর্বে নির্ধারণ করে একটি বিশদ পরিকল্পনা করুন। পরিকল্পনার মধ্যে আপনার সময় ও টাকা দুইটিই বাঁচাতে পারেন।

সহজে ট্রাভেল করুন: আপনি বাইক ভাড়া করে কক্সবাজার ভ্রমন করতে পারেন। এতে সময় ও টাকা দুটোই সেভ হবে।

অন্যান্য তথ্য:

  • কম টাকায় ভ্রমন করতে হলে জিসনের পরে যেতে হবে।
  • একসাথে কয়েকজন গেলে কম টাকায় ভ্রমন করা যাবে।
  • কোন কিছু ক্রয় করার পূর্বে দরদাম করে কিনুন।
  • অপরিচিত কারো কাছে সাহায্য চাইতে ভেবে চিন্তে করুন।
  • হোটেলে থাকতে হলে প্রথমে হোটেল সম্পর্কে ভালো করে জেনে নিন।
  • যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রথমে ভাড়া নির্ধারিত করে নিবেন।
  • সমুদ্রে নামার আগে সতর্ক থাকুন, কখন জোয়ার ভাটা হবে।
  • যে কোন রাইডে চড়ার আছে দাম জেনে নিন।
  • ফটোগ্রাফার দিয়ে ছবি তুললে প্রথমে দাম ঠিক করে নিন।
  • যে কোন প্রয়োজনে ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগীতা নিন। অথবা ৯৯৯ এ কল করে সাহায্য নিতে পারেন।

কক্সবাজার দর্শনীয় স্থান

হিমছড়ি

পাহাড়ের কোল ঘেষা সমুদ্র সৈকত হিমছড়ি। কক্সবাজার এর মূল সমুদ্র সৈকত থেকে এই হিমছড়ি পাহাড় অনেকটাই বেশি নির্জন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। নিরিবিলি এই পরিবেশে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও অনেক বেশি অনুভূত হয়। এটি কক্সবাজারের মূল সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র বারো কি.মি দক্ষিণে অবস্থিত। পাহাড়ে উঠলে চোখের সামনে ভেসে উঠে নীলের দিগন্ত।

হিমছড়িতে রয়েছে হিম শীতল আকর্ষণীয় ঝর্ণাও। পাহাড়ের উপরেও রয়েছে একটি ছোট পর্যটন কেন্দ্র যেখানে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উড়তে হয়। হিমছড়ির সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো- সমুদ্র সৈকত হতে হিমছড়িতে যাওয়ার পথে আকর্ষণীয় মেরিন ড্রাইভ।

ইনানী বিচ

কক্সবাজারের হিমছড়ি থেকে পাঁচ কি.মি ভেতরে রয়েছে ইনানী বিচ নামে প্রবাল পাথরের আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকত। অনেকটা শান্ত প্রকৃতির এই বিচের বেলাভূমিতে আছড়ে পড়ে সাগরের বড় বড় ঢেউ। জোয়ারের সময় দেখা পাওয়া যায় প্রবল পাথরের। সবার পাথরে সাথে লেগে থাকে ধারালো শামুক ঝিনুক, তাই হাঠাহাটি এবং লাফালাফির ক্ষেত্রে খুবই সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপ

কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলা হতে প্রায় ৯ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত সেন্টমার্টিন দ্বীপ। এটি বাংলাদেশের এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রবাল দ্বীপ। নাফ আপনাদের মোহনায় এই আকর্ষণীয় দ্বীপের অবস্থান।

সেন্ট মার্টিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে রয়েছে স্কুবা ডাইভিং, স্নোরকেলিং এর মতো অ্যাডভেঞ্চারের সুযোগ। রাতে সেন্ট মার্টিনের দ্বীপে চলাফেরা করা আপনাকে পৃথিবীর আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে সাহায্য করবে। কক্সবাজার ভ্রমণ করতে গেলে অবশ্যই সেন্ট মার্টিন ভ্রমনের  আনন্দ নেওয়া উচিত।

কুদুম গুহা

এটি কক্সবাজার ভ্রমণ এর একটি প্রাচীন গুহা। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলায় এটি অবস্থিত। বাংলাদেশের একমাত্র বালু-মাটির গুহা হলো এই কুদুম গুহা। এটি কক্সবাজার থেকে টেকনাফ যাওয়ার পথে হোয়াইক্যং পাহাড়ে অবস্থিত। পাহাড় ঘেরা পরিবেশের সাথে বন্যপ্রাণীর চরণভূমি ও পাখির ডাকে কুদুম গুহাটি অত্যন্ত মনোরম হয়ে আছে।

অন্যান্য দর্শনীয় স্থান:

  • মহেশখালী
  • ছেঁড়া দ্বীপ, সেন্টমার্টিন
  • সোনাদিয়া দ্বীপ
  • রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড
  • শাহপরীর দ্বীপ
  • রামু রাবার বাগান
  • নিভৃতে নিসর্গ পার্ক
  • লামাপাড়া খিয়াং
  • ইনানী রয়েল রিসোর্ট
  • মাথিনের কূপ
  • রয়েল টিউলিপ সী পার্ল বিচ রিসোর্ট এন্ড স্পা
  • মারমেইড বিচ রিসোর্ট
  • শামলাপুর সমুদ্র সৈকত
  • আদিনাথ মন্দির
  • ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক
  • কুতুবদিয়া দ্বীপ
  • মেরিন ড্রাইভ রোড
  • রামু বৌদ্ধ বিহার

আরও পড়ুন: প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন ভ্রমন টিপস্

প্রায়স জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর FAQ’S

কক্সবাজার কিসের জন্য বিখ্যাত?

কক্সবাজার জেলা মিষ্টিপান এর জন্য বিখ্যাত।

কক্সবাজার জেলার আয়তন কত?

কক্সবাজার জেলার মোট আয়তন ২৪৯১.৮৬ বর্গ কিলোমিটার।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এর আয়তন কত?

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ১২০ কিলোমিটার।

ঢাকা থেকে কক্সবাজার কত কিলো?

রাজধানী ঢাকা থেকে কক্সবাজার এর দূরত্ব ৪১৪ কিলোমিটার।

কক্সবাজার কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

১৮৫৪ সালে কক্সবাজার থানা গঠিত হয় এবং ঐ বছরই কক্সবাজার গঠিত হয়।

কক্সবাজারের সমুদ্র সৈকত কোথায় অবস্থিত?

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের চট্রগ্রাম বিভাগের কক্সবাজারে অবস্থিত।

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের নাম কি?

বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।

কক্সবাজারের প্রাচীন নাম কী?

কক্সবাজারের প্রাচীন নাম পালংকী।
কক্সবাজারের প্রধান দ্বীপগুলো কী কী?
কুতুবদিয়া, শাহ্পরীর দ্বীপ, মহেশখালী, ছেডাঁ দ্বীপ, সোনাদিয়া ও সেন্টমার্টিন দ্বীপ।

শেষ কথা 

প্রিয় পাঠক আমরা এখানে চেষ্টা করেছি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত নিয়ে সঠিক ও নিভুল তথ্য তুলে ধরতে। সময়ের সাথে গাড়ী ভাড়ার ও খাবার দাম পরিবর্তন হতে পারে। সমুদ্র ভ্রমন যদি আপনার প্রিয় হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই প্রথম পছন্দে আপনি কক্সবাজার ভ্রমন রাখতে পারেন।