ড্রাগন ফলের উপকারিতা: ড্রাগন ফল Dragon fruit (যার বৈজ্ঞানিক নাম Hylocereus undatus) এটি একধরনের ফণীমনসা (ক্যাক্টাস) প্রজাতির ফল, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে এর মহাজাতি হায়লোসিরিয়াস (মিষ্টি পিতায়া)।
এই ফল মূলত ড্রাগন ফল হিসেবে পরিচিত। গণচীন-এর লোকেরা এটিকে আগুনে ড্রাগন ফল এবং ড্রাগন মুক্তার ফল বলে, ভিয়েতনামে মিষ্টি ড্রাগন, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়াতে ড্রাগন ফল, থাইল্যান্ডে ড্রাগন স্ফটিক নামে পরিচিত। এই ফলটি একাধিক রঙের হয়ে থাকে। তবে লাল রঙের ড্রাগন ফল বেশি দেখা যায়।
ড্রাগন কোন কোন দেশে বেশি ফলে
ড্রাগন ফলের চাষ হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যারিবিয়ান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ,অস্ট্রেলিয়া , মেসোআমেরিকা এবং বিশ্বের গ্রীষ্মমন্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় অঞ্চলে।
ড্রাগন ফল dragon fruit
ড্রাগন ফল, যা অন্য নাম পিটাহা ফল বা ড্রাগন ফ্রুট্স নামেও পরিচিত, একটি অসামান্য ফল যা আমের মতো দেখতে এবং সুস্বাদু এই ফল। ড্রাগন ফলের চাষ এখন আমাদের বাংলাদেশেই হচ্ছে। যারফলে ড্রাগন ফল মিলছে এখন দেশের প্রায় সবখানেই।
ড্রাগন ফলের ভেতরের অংশ লাল ও সাদা। দেখতে ও যেমন সুন্দর খেতেও তেমন চমৎকার, পাশাপাশি পুষ্টিগুণের দিক থেকেও অনন্য এই ড্রাগন ফল। বেশ কিছু প্রয়োজনীয় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মেলে ড্রাগন ফল থেকে। এগুলো আমাদের শরীর সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। এই ফলের অনেকগুলো উপকারিতা আছে, নিম্নে ড্রাগন ফলের উপকারিতা তালিকাভুক্ত আকারে প্রকাশ করা হলো:
ড্রাগন ফল খাওয়ার উপকারিতা
- ড্রাগন একটি ফাইবার সমৃদ্ধ ফল। ফলে নিশ্চিন্তে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখতে পারেন এই ফল।
- প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন C মেলে ফলটি থেকে। নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে ।
- ড্রাগন ফল শরীরের জন্য ক্ষতিকর ও উপকারী ব্যাকটেরিয়ার সঠিক নিয়ন্ত্রণ রাখতে ভূমিকা রাখে
- আয়রনের চমৎকার উপস্থিতি আছে রঙিন ড্রাগন ফল। রক্তশূন্যতার সমস্যা দূর করতে প্রতিদিন ড্রাগন ফল খাওয়া উপকারী।
- মরন ব্যাধি ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে ড্রাগন ফল।
- শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভূমিকা রয়েছে এই ফলের।
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে এই ফল। ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে যায়।
- বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ ফলটি নিয়মিত খেলে দৃষ্টিশক্তি ভালো থাকে ও চোঁখের ছানি পড়া রোগের ঝুঁকি কমে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিভাগ জেলা উপজেলা সমূহ
ড্রাগন ফলের উপকারিতা
- ভিটামিন ও খনিজ সমৃদ্ধ: ড্রাগন ফল ভিটামিন সি, ভিটামিন বি6, বি12 এবং খনিজ, যেমন পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন ইত্যাদি সমৃদ্ধ ফল।
- ডিজেস্টিভ সিস্টেম সাপোর্ট: এই ফলে বিশেষভাবে ফাইবারের প্রাচুর্য থাকার জন্য ডাইজেস্টিভ সিস্টেম কে সাপোর্ট করে যাতে পাচনা ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
- বৃদ্ধি শক্তিতে ড্রাগন: ড্রাগন ফলে প্রাচুর্য ক্যালরি থাকার কারণে এটি মানব দেহের শারীরিক শক্তি উন্নতি করতে সাহায্য করে।
- ইমিউনিটি বৃদ্ধি: ড্রাগন ফলে ভিটামিন C প্রচুর পরিমানে রয়েছে যার ফলে দেহের ইমিউনিটি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।
- বিভিন্ন রোগের প্রতিরোধ: ড্রাগন ফলে প্রাচুর্য পরিমানে এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি শরীরের বিভিন্ন ধরণের রোগ বা সংক্রমণ থেকে বাচতে সাহায্য করতে পারে।
- চর্বি নিয়ন্ত্রণ: ড্রাগন ফলে ফাইবার ও ফ্যাট কম থাকার কারণে, এটি মানব দেহের চর্বি নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
চোখের স্বাস্থ্য: ড্রাগন ফলে ভিটামিন A ও lutein থাকার কারণে এটি চোঁখের বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে। - স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: ড্রাগন ফলে Magnesium ও potassium বেশি পরিমাণে থাকার কারণে এটি স্ট্রেস management এ সাহায্য করতে পারে।
ড্রাগনের পুষ্টিগুন
ড্রাগন শুধু দর্শনধারী ফল এবং সুস্বাদুই নয়, গুণবিচারেও এই ফল অনন্য। এই ফলে ক্যালরি কম থাকায় ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীরা অনায়াসে খেতে পারেন। ড্রাগন রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে বলে এটি ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। মানব দেহের কোলেস্টেরল ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। আয়রনের উৎস হিসেবে ড্রাগন দেহের রক্তশূন্যতা দূর করে।
ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসে ভরপুর বলে ড্রাগন হাড় ও দেহের গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ভিটামিন A ও B সমৃদ্ধ বলে দৃষ্টিশক্তির উপকার করে ড্রাগন ফল। সর্বোপরি অ্যান্টি অক্সিডেন্টের ভান্ডার হিসেবে ড্রাগন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ড্রাগন ভবিষ্যতে ছড়িয়ে পড়বে সারা দেশে, হবে সকলের জনপ্রিয় খাবার।
পরিশেষে
ড্রাগন ফলের উপকারিতা (Dragon fruit) সাপেক্ষে, ড্রাগন ফল একটি চমৎকার স্বাস্থ্যকর ফল যা শরীরের বিভিন্ন উপকারিতা উপভোগ করার জন্য নিয়মিত খাওয়া যেতে পারে। তবে, যেকোনো নতুন খাদ্য খাবার তালিকায় যোগ করার আগে সেটি কিভাবে ভালোভাবে সেবন করতে হবে সে সম্পর্কে স্বাস্থ্যবিধি বা ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।