আজকে আমরা আলোচনা করব যৌনস্বাস্থ্যে উপকারী খাবার নিয়ে যার মধ্যে রয়েছে পালং শাক, রসুন, কলা, দুধ, চেরি, বিট, কিসমিস, আপেল, ডিম, বাদাম ও তৈলাক্ত মাছ। প্রিয় পাঠক আমাদের আজকের আলোচনা যৌনস্বাস্থ্যে উপকারী কিছু খাদ্য নিয়ে। যা আমরা প্রতিনিয়ত জানতে চেষ্টা করে থাকি।
পালং শাক
পালং শাকের বৈজ্ঞানিক নাম: Spinacia oleracea যা এমারান্থাসি পরিবারভুক্ত এক প্রকার স-পুষ্পক উদ্ভিদ। এটি জনপ্রিয় একটি সবজি। পালং গাছ ৩০ সে.মি. পর্যন্ত লম্বা হয়। বাংলাদেশে শীতকালে এ শাকের চাষ হয়। পালং শাক অত্যন্ত পুষ্টিকর ও রুচিকর শাক। এ শাকে রয়েছে আছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট। তাজা এবং অল্পসেদ্ধ করে খেলে বেশি এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। ১৯৪১ সালে প্রথম পালং শাকে আবিষ্কৃত হয়েছিল।
উপকারিতা
- পালং শাকে আছে উচ্চ মাত্রার ম্যাগনেসিয়াম, যা শরীরের রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
- পালং শাকে থাকা বেশি মাত্রার ভিটামিন এ, লিম্ফোসাইট বা রক্তের শ্বেত কণিকা দেহকে বিভিন্ন সংক্রমণ ও রোগ থেকে রক্ষা করে।
- পাংল এর উচ্চ মাত্রার বিটা-ক্যারোটিন চোঁখের ছানি পড়ার মতো রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- এর ভিটামিন ‘এ’ ত্বকের বাইরের স্তরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- পালং শাকে থাকা দশটিরও বেশি ভিন্ন ভিন্ন ফ্ল্যাভোনয়েড ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।
- এই শাকে ফলিক এসিড থাকায় তা হার্ডের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে সক্ষম।
যৌন স্বাস্থ্যে পালং শাক
যৌনস্বাস্থ্যে উপকারী খাবার এর মধ্যে পালং শাক অন্যতন। পালং শাকে আছে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়াম শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে। জাপানের একদল গবেষকদের মতে শরীরে রক্ত চলাচল বাড়লে দৈহিক উদ্দীপনাও বাড়ে। পালং শাক ও অন্যান্য বিভিন্ন রকম শাক যেমন ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, লেটুস, এগুলোতে রয়েছে প্রচুর ফলেট, ভিটামিন বি সহ অন্যান্য নানান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো সুস্থ যৌন জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় কিছু উপাদান। সব মিলিয়ে পালং শাক শীতকালের এক অসাধারণ সবজি।
রসুন
আমরা মসলা হিসেবে প্রতিদিন রসুন ব্যবহার করে থাকি। তাছাড়া বিভিন্ন আচার ও মুখরোচক খাবার তৈরিতে রসুনের নানান ব্যবহার রয়েছে।
রসুনের পুষ্টিগুণ
রসুন হল পেঁয়াজ জাতীয় একটি উদ্ভিদ যার স্বতন্ত্র স্বাদ এবং স্বাস্থ্য উপকারীতা রয়েছে। রসুন অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি মসলা কিন্তু এতে খুব কম ক্যালোরি আছে-
কাঁচা রসুনের একটি লবঙ্গ (৩ গ্রামে) থাকে :
- ম্যাঙ্গানিজ: দৈনিক মূল্যের ২% (dv)
- ভিটামিন সি: ডিভির ১%
- ভিটামিন বি 6: ডিভির ২%
- ফাইবার: ০.০৬ গ্রাম
- সেলেনিয়াম: ডিভির ১%
- এটি ৪.৫ ক্যালোরি, ০.২ গ্রাম প্রোটিন এবং
- ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেটের সাথে আসে।
রসুনের উপকারিতা
রসুনকে গরীবের ঔষুধ বলা হয়। রসুনের নানমুখী উপকারিতা রয়েছে। রসুন ফোড়া ভালো করে, পাকস্থলী থেকে গ্যাস নির্গত করে, ঋতুস্রাব চালু করে, প্রস্রাব স্বাভাবিক করে, নিস্তেজ লোকদের মধ্যে যৌন ক্ষমতা সৃষ্টি করে, বীর্য বৃদ্ধি করে, পাকস্থলী ও গ্রন্থর ব্যাথার উপকার সাধন, এ্যাজমা এবং কাঁপুনি রোগেও ভালো উপকার সাধন করে।
পুরুষের যৌনক্ষমতা বাড়াতে রসুন
পুরুষের যৌনক্ষমতা বিভিন্ন কারণে দিন দিন কমে যেতে পারে, যৌন ক্ষমতা বাড়াতে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে দুই কোয়া কাঁচা রসুন খেলে ধীরে ধীরে যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। পুরুষের যৌন ক্ষমতার মূল উৎস হচ্ছে রক্তের সাবলীল গতি। রসুন শরীরে এই কাজ করে বলেই রসুনকে যৌনক্ষমতায় উপকারী বলা হয়। (তথ্য সূত্র: উইকিপিডিয়া)
ডিম
ডিম একটি সহজলভ্য ও উন্নতমানের আমিষজাতীয় খাদ্য, গ্রামে বা শহরে সব জায়গায় ডিম পাওয়া যায়। কমবেশি আমরা সবাই ডিম খেয়ে থাকি। ডিমে রয়েছে প্রাকৃতিক ভিটামিন, যা দেহগঠনে, যৌনস্বাস্থ্যে উপকারী খাবার গুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ডিমের পুষ্টি উপাদন
সব ধরনের ডিমে রয়েছে অতি মূল্যবান ওমেগা-৩, যা শরীরে হৃৎপিণ্ডকে সচল রাখতে সাহায্য করে। একটি মাঝারি সাইজের রান্না করা ডিমে (50 গ্রাম)
- 78 ক্যালোরি,
- 6.29 গ্রাম প্রোটিন,
- 0.56 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট
- 5.3 গ্রাম ফ্যাট রয়েছে, যার মধ্যে 1.6 গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট, 2.0 গ্রাম মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, 0.7 গ্রাম ফ্যাট, 0.7 গ্রাম।
- 86 মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল।
মুরগির ডিমের পুষ্টি গুণ
একটি সাধারণ মুরগির ডিমে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন আছে , যাতে রয়েছে মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ৯ টি অ্যামিনো অ্যাসিড। যা গর্ভবতী মায়ের মস্তিষ্কজনিত জটিলতা দূরীকরণে সহায়তা করে, গের্ভের শিশুর মেধা ও স্মৃতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ডিমে রয়েছে ফলিক অ্যাসিড অথবা ফোলেট, যা ত্রুটিপূর্ণ সন্তান জন্মদানের ঝুঁকি কমায়
এ ছাড়াও ডিমে রয়েছে সেলেনিয়াম, যা মানুষের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার, বিশেষত প্রোস্টেট ক্যান্সার রোধে সহায়তা করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ মানুষ দিনে একটি ডিম খেতে পারে। খাদ্য সংস্থার সুপারিশ অনুযায়ী বছরে প্রতিজন মানুষের গডে ১০৪ টি ডিম খাওয়া উচিত।
যৌন স্বাস্থ্যে ডিম
পুষ্টিকর খাবারের তালিকায় ডিমের নাম উপরের দিকেই রয়েছে । ডিম যৌন সামর্থ্য বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ডিমে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৬ থাকে যা হরমোন লেভেলের ভারসাম্য রক্ষা করে এবং দেহের ক্লান্তি দূর করে।
আপেল
হাজার বছর ধরে এশিয়া ও ইউরোপে আপেলকে গুরূত্বপূর্ন খাদ্য উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে আসছে। আপেলে প্রায় ৮০% পানি থাকে যা শরীরের জন্য অতীব দরকারি। আপেল প্রায়ই কাঁচা খাওয়া হয় তবে আপেল আরোও বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যেতে পারে যেমন- রস হিসেবে জুস বানিয়ে, পিস হিসেবে রান্না করে, সালাদ হিসেবে এবং আপেল কখনো কখনো সসেজ এবং স্টাফিং এর মতো মজাদার খাবার গুলির উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সবুজ আপেল এর পুষ্টি গুন
লাল আপেলের চেয়ে সবুজ আপেলের পুষ্ঠিগুণ বেশি। সবুজ আপেল লাল আপেলের মতো স্বাদযুক্ত না হলেও সবুজ আপেলের রয়েছে অনেক উপকারিতা।
আঁশঃ সবুজ আপেলে রয়েছে আঁশ। আঁশ দেহের হজমে সাহায্য করে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে।
হাড় শক্ত করেঃ সবুজ আপেলের মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম,আয়রন, জিঙ্ক, কপার, ম্যাঙ্গানিজম পটাশিয়াম ইত্যাদি। এই মিনারেলগুলো হাড়কে শক্ত ও মজবুত রাখে।
কোলন ক্যানসার প্রতিরোধে আপলেঃ সবুজ আপেলের আঁশ মানবদেহের কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে কাজ করে।
রক্তের অপ্রয়েজনীয় কোলেস্টেরল কমায়ঃ সবুজ আপেল রক্ত থেকে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। দেহে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।
লিভার সুস্থ রাখেঃ সবুজ আপেলের মধ্যে থাকা পুষ্টি উপাদান লিভারকে ভালো রাখে। এটি দেহের বিভিন্ন ধরনের লিভারের সমস্যাজনিত রোগ প্রতিরোধ করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়ঃ সবুজ আপেলের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন এবং মিনারেল। এগুলো বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। তাই সবুজ আপেলকে নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখুন।
যৌন ক্ষমতায় আপেল
প্রতি দিন সকল পুরুষদের একটি করে আপেল খাওয়া উচিত। আপেলের মধ্যে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা জননাঙ্গে রক্ত সরবরাহ বাড়ায় ও যৌনস্বাস্থ্যে উপকারী খাবার।
দুধ
দুধ হল অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এক প্রকার সাদা তরল পদার্থ যা দুধ মানুষের একটি প্রধান সুষম খাদ্য। দুধে আমিষ ও ল্যাক্টোজ সহ অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান আছে।
মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য এটা খুবই উপকরণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ইত্যাদি সহ ওমেগা থ্রি, সিক্স প্রভৃতি। এই প্রয়োজনীয় উপাদান থাকার জন্য দুধকে সুপার ফুড বলা হয়ে থাকে। দুধ আমাদের শরীরে কাজ করার ক্ষমতা বাড়ায়। দুধ দেহের কোষ মেরামত করতে সাহায্য করে থাকে।
পুষ্টি উপাদান
পানি (গ্রাম) ৮৭.৭, খাদ্যশক্তি (কিলো ক্যালরি) ৬৪, আমিষ (গ্রাম) ৩.৩, এ্যাশ (গ্রাম) ০.৭, ফ্যাট (গ্রাম) ৩.৬, কোলেস্টেরল (মিলিগ্রাম) ১১, পটাসিয়াম (মিলিগ্রাম) ১৪৪, ভিটামিন-এ (আই ইউ) ১৪০১।
দুধের উপকারিতা
হাড় ভালো রাখতে দুধ: দুধে প্রচুর ক্যালসিয়াম রয়েছে। একটি নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত মানুষের শরীরের হাড়ে ক্যালসিয়াম জমা হয় তার পর আর ক্যালসিয়াম জমা হয় না বরং পর্যায়ক্রমে ক্যালসিয়াম ক্ষয় হতে থাকে। তাই এই ক্যালসিয়াম ঘাটতি পূরণ করতে নিয়মিত দুধ খাওয়া উচিত।
পেশী সুস্থ রাখে: দুধে রয়েছে উচ্চমাত্রায় প্রোটিন। নয় ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এর উৎস এই প্রোটিন। এগুলো শরীরে বয়সের ছাপ পড়া থেকে বাছিয়ে রাখে ও পেশী সবল রাখে। দেহের পেশীর কোষ মেরামত করতে সাহায্য করে।
শিশুর জন্য আদর্শ খাবার: শিশুর মানুষিক বিকাশে দুধের ভূমিকা অনস্বীকার্য। মস্তিষ্কের কোষের বৃদ্ধি ও বিকাশের সহায়তার জন্য ২ বছরের পর থেকে শিশুকে নিয়মিত দুধ খাওয়াতে হবে।
ভিটামিনের চমৎকার উৎস: দুধ এমন একটি সুপার ফুড,দুধে মিলে প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান। ভিটামিন এ, বি কমপ্লেক্স, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, আমিষ, শর্করা, ফ্যাট ও ম্যাগনেশিয়াম পাওয়া যায়। এসব ভিটামিন উপাদান সুস্থতার জন্য খুবই জরুরী।
যৌন দুবর্লতায় দুধ
যেসব প্রাকৃতিক খাবারে বেশি পরিমাণে প্রাণিজ-ফ্যাট আছে এমন প্রাকৃতিক খাদ্য আপনার যৌনজীবনের উন্নতি ঘটাবে। আপনি যদি শারিরিক হরমোন বাড়াতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত দুধ খেতে হবে।
কলা
কলা বিশ্বব্যাপী একটি জনপ্রিয় ফল। কলা বিভিন্ন পুষ্টি গুণাগুণে ভরপুর সহজলভ্য একটি বারোমাসি ফল। এতে রয়েছে দৃঢ় টিস্যু গঠনকারী উপদান- যথা আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ। কলা ক্যালরির একটি ভাল উৎস। কলাতে পানি জাতীয় উপাদান সমন্বয় যে কোন তাজা ফলের চাইতে বেশি। একটি বড় মাপের কলা খেলে ১০০ ক্যালরির বেশি শক্তি পাওয়া যায়। কলাতে রয়েছে সহজে হজমযোগ্য শর্করা। এই শর্করা পরিপাকতন্ত্রকে সহজে হজম করতে সাহায্য করে। কলার মধ্যে থাকা আয়রন রক্তে হিমোগ্লোবিন উত্পাদনে সাহায্য করে।
কলার পুষ্ঠিগুন
প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলায় যে খাদ্যগুণ আছে তা নিম্নরূপঃ
- প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলায়
- খনিজ লবণ ০.৮%
- জল ৭০.১%
- আমিষ ১.২%
- ফ্যাট (চর্বি) ০.৩%
- আঁশ ০.৪%
- শর্করা ৭.২%
মোট ১০০.০%
কলার উপকারিতা
- কলা ওজন কমাতে ও ত্বক ভালো রাখার পাশাপাশি মলাশয়ের সুস্থতাও রক্ষা করতে পারে।
- মুখ ও ত্বকের উন্নতি
- দেহের পেশির টান পড়া কমায়
- লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
যৌন দুর্বলতায় কলা
কলা যে শুধু দেহের পুষ্টি বাড়ায় তাই নয়, যৌন আখাংকা তীব্র করে তুলে। কলায় প্রচুর পরিমাণে রয়েছে পটাশিয়াম যা যৌন মিলনে শক্তি যোগায় ও রিবফ্লাবিন যা শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি করে দেহকে সুস্থ রাখে ও মান উন্নত করে।
বাদাম
বাদামের স্বাস্থ্য উপকারিতা
- বাদাম হৃদপিণ্ড ও রক্তের ভালো কোলেস্টেরল বাড়ায়।
- চোঁখ, ত্বক, হাড় ও দাঁতের গঠনে সাহায্য করে।
- বাদাম হজম প্রক্রিয়া মজবুত করে।
- হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে বাদাম।
- বাদাম মস্তিষ্কের বিকাশে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
যৌন স্বাস্থ্যে বাদাম
তৈলাক্ত মাছ
মাছ বাঙালিদের প্রিয় খাবার, আমরা মাছে ভাতে বাঙালি। মাছ বিশ্বের সব দেশের মানুষ খেয়ে থাকে। মাছ খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে- যেমন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলা সহ নানান সমস্যার সমাধান করে মাছ। তার মধ্যে তৈলাক্ত মাছ অন্যতম।
তৈলাক্ত মাছ
বিশেষ করে (ইলিশ, গুরজাওলি, ভেটকি, আড়, পমফ্রেট, ম্যাকারেল, শিং, বোয়াল, চিতল, কাতলা ও রুই ইত্যাদি) মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, ভিটামিন ডি, আয়োডিন, ফসফরাস-সহ নানা খনিজ পদার্থ মস্তিষ্ককে উজ্জীবিত করার পাশাপাশি সামগ্রিক ভাবে শরীর সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
মাছের উপকারিতা
মাছে রয়েছে প্রচুর আমিষ যা মানব দেহের জন্য অত্যান্ত উপকারী। মাছের মধ্যে এমন অনেক জরুরি উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া যায় যা আপনার আমার শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। প্রতিদিন মাছ খেলে ডায়বেটিসের মতো রোগও শরীরে বাসা বাঁধতে পারে না। প্রতিদিন মাছ খেলে ব্রেন স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কিছুটা হলেও কমে যায়। বার্ধক্যজনিত কারণে চোঁখের ম্যাকিউলার ডিজেনারেশন কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে মাছ।
মাছে যে ভিটামিন ডি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ডিএইচএ আছে এগুলো পুরুটাই অ্যান্টি-ডিপ্রেশানের জন্য খুবই কার্যকরী। প্রতিদিন মাছ খেলে শুধু শরীর নয় মন-মানষিকতা ও ভালো থাকবে।
যৌন দুর্বলতায় তৈলাক্ত মাছ
তৈলাক্ত মাছে রয়েছে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড যা সুস্থ যৌন জীবনের জন্য অত্যন্ত উপকারী। সামুদ্রিক মাছেও প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড থাকে।
বিট
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিট দিন দিন সুপার ফুড হিসেবে দেশে বিদেশে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বিটরুটের বৈজ্ঞানিক নাম ‘বেটা ভালগারিস’। এটি মূলত শীতকালীন ফল হলেও সারা বছর জুড়ে পাওয়া যায় এই বিট। কালচে লাল রঙের পেঁয়াজের মতো আকৃতির এই ফল নানা ধরনের পুষ্টিগুণ ও ঔষধি গুণে সমৃদ্ধ।
বিটের পুষ্টি উপাদান
একটি বিটরুটে ভিটামিন সি , ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, ক্যালোরি, ফাইবার ছাড়াও প্রয়োজনীয় অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে।
বিট ফল খাওয়ার নিয়ম
বিটরুট সালাদ, সবজি এবং জুস বানিয়ে খাওয়া যায়। অনেকেই আবার সবজি হিসেবে রান্না করে খেয়ে থাকেন। স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ বিটকে বিভিন্ন ফলের সাথে মিশিয়ে জুস হিসেবে বেশি খেয়ে থাকেন।
বিটের উপকারিতা
- বিট রক্তনালী প্রসারিত করে ও উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে দেয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।
- বিট এ থাকা নাইট্রেট এবং বেটালাইনস রক্তনালীর প্রদাহ কমিয়ে দেয়।
- বিটরুটে থাকা আয়রন নতুন লোহিত রক্ত কণিকা তৈরি করতে সক্ষম যা মহিলাদের অনিয়মিত মাসিক সমস্যা সমাধানে খুবই উপকারী।
- বিট আঁশ জাতীয় খাবার। হজমের সমস্যায় ভুগলে বিট খাওয়া উপকারী। বিটে থাকা ফাইবার খাবার হজমে সাহায্য করে।
আরও পড়ুন: মেথির উপকারিতা ও অপকারিতা। মেথির পুষ্ঠিগুণ
- বিটে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা লুটেইন নামেও পরিচিত। লুটেইন বয়স সম্পর্কিত চোঁখের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- প্রতিদিন এক গ্লাস বিটের জুস ত্বক উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। ব্রণ, বলিরেখা, মেছতা দূর করে ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখে।
যৌন দুর্বলতায় বিট
পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বিট জননাঙ্গের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে ও যৌনস্বাস্থ্যে উপকারী খাবার। তাই নিয়ম করে প্রতিদিন বিট খাওয়া উচিত। সালাদের সঙ্গে করে বিট খেলে প্রচুর নাইট্রট শরীরে প্রবেশ করবে।
চেরি ফল
যৌনস্বাস্থ্যে উপকারী খাবার চেরি ফল সবসময়ই আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারি। তেমনি উপকারি এক ধরনের ফল চেরি। আসুন তাহলে জেনে নেই চেরি ফলের উপকারিতা সম্পর্কে
চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা
- চেরি ফলে প্রচুর ভিটামিন-সি রয়েছে। শরীরের কোন অংশে কেটে গেলে সেটার ক্ষত পূরণে অসাধারন ভূমিকা পালন করে থাকে চেরি ফল।
- চেরি ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পটাসিয়াম যার মাত্রা প্রায় ১৭৫ মিলিগ্রাম। যাদের রক্ত চাপ রয়েছে তারা নিয়মিত চেরি ফল খেতে পারেন এতে উপকারিতা পাবেন।
- চেরি ফল খেলে ডায়াবেটিস রোধ করে থাকে।
- দেহে রক্ত সঞ্চালনে সহায়তা করে থাকে চেরি ফল। যাদের হার্টের রোগ রয়েছে যাদের তাদের জন্য চেরি ফল অত্যান্ত উপকারি।
- চেরির অন্যতম উপকারিতা হলো বলিরেখা প্রতিরোধ করে থাকে। মহিলারা নিয়মিত চেরি ফল খাওয়ার কারনে নিজের ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে।
- নিয়মিত চেরি ফল খেলে পেটের চর্বি জমাট বাঁধতে দেয় না।
যৌন দুর্বলতায় চেরিফল
চেরিতে প্রচুর অ্যান্থোসায়ানিন বিদ্যমান থাকায় ধমনীতে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। এজন্যই প্রতিদিন চেরি খেলে পুরুষদের যৌনশক্তির উন্নত হয়। নিয়মিত চেরি ফল খেলে পেশিতে ব্যথা, পেশি ক্ষয়ের মতো সমস্যা দূর হয়। অ্যাথলিটদের পক্ষে চেরি খাওয়া বিশেষ উপকারী। সাইক্লিস্ট চেরি ফলের রস খেলে দীর্ঘক্ষণ শক্তি ও দমনী ধরে রাখতে পারেন।
সিকমিস
যৌন দুর্বলতায় কিসমিস খেলে উপকার পাওয়া যায় কিনা তা নিয়ে তেমন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যান নি। তবে, কিসমিসের বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যা যৌন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। যেমন, কিসমিসে ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলি যৌন হরমোন উৎপাদন, রক্ত সঞ্চালন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে।
কিসমিসে থাকা ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের কোষগুলিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই একটি অপরিহার্য ফ্যাটি অ্যাসিড যা প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। জিঙ্ক একটি খনিজ যা প্রজনন হরমোন উৎপাদন এবং শুক্রাণুর গুণমানের উন্নতি করতে সাহায্য করে। ম্যাগনেসিয়াম একটি খনিজ যা রক্ত সঞ্চালন উন্নত করতে সাহায্য করে। ফাইবার একটি পুষ্টি উপাদান যা হজম স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে সাহায্য করে।
যদিও কিসমিস খেলে যৌন দুর্বলতায় উপকার পাওয়া যায় কিনা তা নিয়ে নিশ্চিত কোনও প্রমাণ নেই, তবে এটি একটি স্বাস্থ্যকর খাবার যা যৌন স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। তাই, নিয়মিত কিসমিস খেলে যৌন স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে। তবে, যদি আপনি যৌন দুর্বলতার সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
শেষকথা:
আমাদের প্রতিদিন পুষ্ঠিকর খাদ্য গ্রহন করা দরকার, প্রচুর পরিমানে শাকসবজি গ্রহন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, সেই সাথে দেশীয় ফলমূল খেলে প্রচুর ক্যালরী পাওয়া যায়। আশা করছি এই যৌনস্বাস্থ্যে উপকারী খাবার লেখা পড়ে কিছুটা হলেও উপকৃত হবেন।