ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের একটি দ্রুতগতিসম্পন্ন গণপরিবহন ব্যবস্থা হলো ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ (Metrorail-Bangladesh)। মেট্রোরেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হচ্ছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড। ২০১৩ সালের ঢাকা নগরীর অতি জনবহুল যানবাহন সমস্যা ও পথের ভয়ংকর যানজটরের সমস্যা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। যার অধীনে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ঢাকায় মেট্রোরেল স্থাপনের পরিকল্পনা করা হয়।

২০১৬ সালে ঢাকায় মেট্রো রেলের সংখ্যা ৩ টি থেকে বাড়িয়ে ৫ টি করা হয় প্রণিত সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা অনুসারে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২১.২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন -৬ কে নির্বাচন করা হয় নির্মাণের জন্য। ২০১৬ সালের ২৬ শে জুন এমআরটি লাইন ৬ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

২০৩০ সাল নাগাদ জাইকা ও ডিএমটিসিএল ১২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের মোট ছয়টি মেট্রো লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। প্রতিদিন এই ৬ টি লাইন মিলিতভাবে ৪৭ লাখ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ এ। এই লাইনগুলোর মধ্যে ৫৩ টি ভূ গর্ভস্থ স্টেশন থাকবে ও ৫১ টি উড়াল স্টেশন থাকবে।

২০২২ সালের ২৮ শে ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে ঢাকায় মেট্রোরেল আংশিক চালু হয়। এমআরটি লাইন ৬ এর দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত উদ্বোধনের মাধ্যমে চালু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ এর প্রথম অনুষ্ঠানিক যাত্রার অংশ ছিলেন। ২৯ শে ডিসেম্বর ২০২২ সাল থেকে জনগণের চলাচলের জন্য প্রথম মেট্রোরেল কে খুলে দেয়া হয়। প্রথম দিকে শুধু উত্তরা উত্তর (দিয়া বাড়ি) থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত এই দুইটি স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন থামতো। পরবর্তীতে ২৫ শে জানুয়ারি ২০২৩ সালে পল্লবী স্টেশন চালু করা হয়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসের শেষের দিকে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত সবগুলো স্টেশন চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এক নজরে ঢাকা মেট্রোরেল এর বিবরণ

  • পরিবহনের ধরন – দ্রুতগামী গণ পরিবহন ব্যবস্থা।
  • অবস্থান – ঢাকা বাংলাদেশ।
  • প্রধান কার্যালয় – ঢাকা বাংলাদেশ।
  • লাইনের সংখ্যা – ১ (নির্মানাধীন) ৫ (পরিকল্পিত)।
  • চালুর তারিখ – ২৮ শে ডিসেম্বর ২০২২ সাল।
  • দৈনিক যাত্রী সংখ্যা – এমআরটি লাইন ৬ এর ৬০,০০০ হাজার প্রতি ঘন্টায়।
  • পরিচালক সংস্থা – ঢাকার ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড।
  • মেট্রো রেল স্টেশনের সংখ্যা – ১০৪টি পরিকল্পিত ও ১৬ টি নির্মাণাধীন। এর মধ্যে রয়েছে পাতাল ৫৩ টি ও উড়াল ৫১ টি।
  • মোট রেলপথের দৈর্ঘ্য – ২১.২৬ কিলোমিটার নির্মাণাধীন ও ১২৮.৭৪১ পরিকল্পিত।
  • ওয়েবসাইট – www.dmtcl.gov.bd

ঢাকা মেট্রোরেল সময়সূচি

উত্তরা উত্তর স্টেশন – আগারগাঁও স্টেশন

চলাচলের সময় সকাল ০৮.৩০ মিনিট থেকে দুপুর ১২.৩০ মিনিট পর্যন্ত প্রতি ১০ মিনিট পরপর
একক যাত্রা টিকিট ক্রয়ের সময় সকাল ০৮.০০ থেকে দুপুর ১২.০০ পর্যন্ত
MRT Pass ক্রয়ের সময় সকাল ০৮.০০ থেকে দুপুর ১২.০০ পর্যন্ত এবং বিকাল ০৩.০০ থেকে রাত ০৯.০০ পর্যন্ত
MRT Pass ক্রয়ের নিয়ম www.dmtcl.gov.bd হতে MRT Pass নিবন্ধন ফরম সংগ্রহ করে যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে।
সাপ্তাহিক বন্ধ মঙ্গলবার
যাতায়াতের স্টেশন সমূহ উত্তরা উত্তর-পল্লবী-আগারগাঁও।

MRT Pass ধারী যাত্রীগণ Pass প্রদর্শন সাপেক্ষে ১২.০০ ঘটিকা পর্যন্ত সরাসরি স্টেশনে প্রবেশ করতে পারবেন।

ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ দিনের শুরুতেই সর্বপ্রথম উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল করবে। মেট্রো রেল চলাচল করবে ফজরের নামাজের পর থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত। মেট্রোরেল চলাচলের শুরুতে প্রতি ১০ মিনিট পরপর প্লাটফর্ম থেকে ট্রেন ছেড়ে যাবে। পরবর্তীতে জনগণ অভ্যস্ত হয়ে গেলে মেট্রোরেলে প্রতি সারে তিন মিনিট পর পর ট্রেন ছাড়া হবে। মেট্রোরেলের যাত্রী বেড়ে গেলে এবং এতে ঢাকার জনগণ চলাচল করে অভ্যস্ত হয়ে উঠলে একটার পর আরেক টা ট্রেন ছাড়ার সময় কমিয়ে আনা হবে।

মেট্রোরেলের ভাড়ার তালিকা

দিয়াবাড়ি থেকে উত্তরা সেন্টার ২০ টাকা
দিয়াবাড়ি থেকে পল্লবী ৩০ টাকা
দিয়াবাড়ি থেকে মিরপুর-১০ ৪০ টাকা
পল্লবী থেকে মিরপুর-১১ ২০ টাকা
পল্লবী থেকে শেওড়াপাড়া ৩০ টাকা
মিরপুর-১০ থেকে ফার্মগেট ৩০ টাকা
দিয়াবাড়ি থেকে শেওড়াপাড়া ৫০ টাকা
মিরপুর-১০ থেকে কারওয়ান বাজার ৪০ টাকা
মিরপুর-১০ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৫০ টাকা
আগারগাঁও থেকে দিয়াবাড়ি ৬০ টাকা
মিরপুর-১০ থেকে কমলাপুর ৭০ টাকা
দিয়াবাড়ি থেকে কমলাপুর ১০০ টাকা

ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ এর এক স্টেশন থেকে আরেক স্টেশনে যেতে ভাড়া কত লাগবে, সে বিষয়ে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ ডিটিসিএ মেট্রোরেলের ভাড়ার পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছেন। মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া পাঁচ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মেট্রো রেলের সর্বনিম্ন ভাড়া হলো ২০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ভাড়া হলো উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মেট্রোরেল সপ্তাহে প্রতি মঙ্গলবারে সাপ্তাহিক বন্ধ থাকে।

পল্লবী স্টেশন থেকে মিরপুর -১০, মিরপুর -১১ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ২০ টাকা। পল্লবী থেকে আগারগাঁও ও শেওড়াপাড়া স্টেশন এর ভাড়া ৩০ টাকা। মিরপুর -১০ থেকে সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে যেতে ভাড়া লাগবে ৬০ টাকা এবং কমলাপুর স্টেশনে যেতে ৭০ টাকা। মিরপুর – ১০ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও শাহবাগ স্টেশন এর ভাড়া ৫০ টাকা। মিরপুর -১০ থেকে ফার্মগেট স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা ও কারওয়ান বাজার স্টেশন এর ভাড়া ৪০ টাকা।

ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ এর উত্তরা উত্তর স্টেশন (দিয়াবাড়ি) থেকে আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া হবে ৬০ টাকা। এর মাঝে মেট্রোরেলের আরো সাতটি স্টেশন রয়েছে। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা দক্ষিণ ষ্টেশনের ভাড়া একই ২০ টাকা। প্রথম স্টেশন উত্তরা উত্তর থেকে মিরপুর -১১ ও পল্লবী স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা । কাজীপাড়া ও মিরপুর -১০ এর স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশন এর ভাড়া ৫০ টাকা।

কমলাপুর স্টেশন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনের ভাড়া একই ২০ টাকা। কমলাপুর থেকে কারোয়ান বাজার ও শাহাবাগের স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, আগারগাঁও বিজয় সরণি ৫০ টাকা, ফার্মগেট ৪০ টাকা শেওড়াপাড়া ৬০ টাকা, মিরপুর ১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন ৭০ টাকা, পল্লবী ও মিরপুর -১১ এর স্টেশনের ভাড়া ৮০ টাকা। কমলাপুর স্টেশন থেকে উত্তরা উত্তর স্টেশন এর ভাড়া ৯০ টাকা।

ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) স্মার্ট কার্ডে ভাড়া পরিশোধ করলে দশ শতাংশ রেয়াত প্রধানের বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন।

মেট্রোরেলে চলাচল করার জন্য আগে পারিবারিক কার্ড কিনতে হবে সাপ্তাহিক বা মাসিক ভাবে। প্ল্যাটফর্মের প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় কার্ড পাঞ্চ করতে হবে, না হলে দরজা খুলবে না। কার্ডগুলো রিচার্জ করা যাবে মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশনে থাকা মেশিন গুলো থেকেও এবং আরেকটি কার্ড হচ্ছে সাময়িক যা প্রতি যাত্রায় দেয়া হবে। এই কার্ডটি স্মার্ট কার্ডের মত। ভাড়ার থেকে অতিরিক্ত যাতায়াত করলে এ কার্ড দিয়ে দরজা খুলবে না। সে ক্ষেত্রে মেট্রোরেলের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের কাছে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে বের হতে হবে। স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট গন্তব্যের ভাড়া দিয়ে এই কার্ড সংগ্রহ করতে হবে।

ঢাকা মেট্রোরেল এর প্রকল্প বর্ণনা

বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগ্রহের ফলে ১৮ ডিসেম্বর ২০১২ সালে বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার ঢাকা ম্যাস রেপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট তথা ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে অনুমোদন লাভ করেন।

এমআরটি লাইন – ১ (পূর্বাচল যাত্রাপথ)

১১.৩৭ কিলোমিটার হবে উড়াল পথে নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ ডিপু পর্যন্ত। ২০২৮ সাল নাগাদ এই লাইনের কাজ শেষ হতে পারে। যার ফলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ২০ মিনিটের মধ্যে নতুন বাজার থেকে পিতলগঞ্জ যাওয়া যাবে।

এমআরটি লাইন – ১ (বিমানবন্দর যাত্রাপথ)

১৫ই অক্টোবর ২০১৯ সালে এমআরটি-১ নামক লাইনের প্রকল্প নির্মাণ অনুমোদিত হয়। এমআরটি -১ প্রকল্পে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। এমআরটি -১ প্রকল্পের আওতায় রয়েছে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর ও নতুন বাজার থেকে পূর্বাচল পর্যন্ত মোট ৩১.২৪ কিলোমিটার পথে ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ নির্মিত হবে। এই মেট্রোরেল নির্মাণে ৫২ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা খরচ হবে এর মধ্যে জাপান সরকার দিবেন ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা বাকি ১৩ হাজার ১১১ কোটি টাকা আসবে সরকারি তহবিল থেকে। এমআরটি -১ প্রকল্পে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত পাতাল পথে হবে ১৬.২১ কিলোমিটার এবং কুড়িল থেকে পূর্বাচল ডিপু পর্যন্ত উড়াল পথে হবে ১১.৩৬ কিলোমিটার। নতুন বাজার থেকে কুড়িল পর্যন্ত ৩.৬৫ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রানজিশন লাইনসহ ৩১.২৪ কিলোমিটার রেল লাইন নির্মাণ করা হবে। এমআরটি লাইন -১ হলো দেশের প্রথম পাতাল মেট্রো রেল। এই মেট্রোরেলের ৭ টি স্টেশন থাকবে উড়াল সেতুর উপর এবং মাটির নিচে থাকবে ১২ টি স্টেশন।

এমআরটি লাইন – ২

২০৩০ সালের মধ্যে এমআরটি লাইন -২ এর কাজ শেষ করা হবে। এরই মধ্যে জাপান সরকার ও বাংলাদেশ সরকার সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করেছেন। এমআরটি লাইন -২ এর মধ্যে রয়েছে গাবতলী থেকে চট্টগ্রাম রোড পর্যন্ত উড়াল ও পাতাল সমন্বয়ে প্রায় ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ জি২জি ভিত্তিতে পিপিপি পদ্ধতিতে ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ এর এমআরটি লাইন-২ নির্মাণ করা হবে।

এমআরটি লাইন – ৩

পিপিপি পদ্ধতিতে কমলাপুর থেকে নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে ট্রাকের পাশ দিয়ে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল মেট্রো রেল এমআরটি লাইন -৪ নির্মাণের উদ্যোগ প্রক্রিয়াধীন। ২০৩০ সালের মধ্যে এমআরটি লাইন -৪ এর কাজ শেষ করা হবে।

এমআরটি লাইন – ৪ (দক্ষিন)

২০৩০ সালের মধ্যে এমআরটি লাইন -৫ এর কাজ শেষ করা হবে । গাবতলী থেকে দেশেরকান্দি পর্যন্ত ১৭.৪০ কিলোমিটার মেট্রোরেল নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে উড়াল পথ হচ্ছে ৪.৬০ কিলোমিটার এবং পাতাল পথ হচ্ছে ১২.৮০ কিলোমিটার।

এমআরটি লাইন – ৫ (উত্তর)

ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ এর এমআরটি লাইন -৫ নির্মাণ প্রকল্পে ২০ কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করা হবে হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত। এই প্রকল্পে মোট খরচ হবে ৪১ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। জাপান সরকার দিবেন এর মধ্যে ২৯ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, বাকি ১২ হাজার ১২১ কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার দিবেন। এমআরটি লাইন -৫ প্রকল্পের মোট ২০ কিলোমিটার এর মধ্যে উড়াল পথে হবে সাড়ে ৬ কিলোমিটার এবং পাতাল পথে হবে ১২ কিলোমিটার। এই রুটে মোট ১৪ টি স্টেশন হবে এর মধ্যে পাতাল পথে হবে ৯ টি আর ৫ টি হবে উড়াল পথে।

এমআরটি লাইন – ৬ (প্রথম পর্যায়ে )

প্রথম পর্যায়ে এমআরটি লাইন – ৬ নামক ২০.১০ কিলোমিটার দীর্ঘ পথকে নির্মাণের জন্য নির্ধারণ করা হয়। ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ এর এমআরটি লাইন – ৬ প্রকল্পের মোট খরচ ধরা হয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের সহায়তা হিসেবে জাইকা দিবে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এমআরটি লাইন -৬ প্রকল্পের পরিকল্পনা অনুযায়ী মেট্রোরেল চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল দুদিক থেকে ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। এই রুটের ১৬ টি স্টেশন হচ্ছে – উত্তরা-উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, মিরপুর ১০, মিরপুর ১১, পল্লবী, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, বিজয় স্মরণি,কারওয়ান বাজার, আগারগাঁও, ফার্মগেট, মতিঝিল, সচিবালয়, শাহবাগ, কমলাপুর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। এমআরটি লাইন -৬ এর চূড়ান্ত রুট অ্যালাইনমেন্ট হলো – উত্তরা তৃতীয় ধাপ পল্লবী রোকেয়া স্মরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে খামার বাড়ি হয়ে ফার্মগেট, সোনারগাঁও হোটেল, শাহবাগ, টিএসসি , দোয়েল চত্বর, তোফখানা রোড থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত।

আরও পড়ুন: ঢাকার দর্শনীয় ঐতিহাসিক স্থানসমূহ

এমআরটি লাইন – ৬ (দ্বিতীয় পর্যায়ে)

দ্বিতীয় পর্যায়ে এমআরটি লাইন – ৬ এর আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০২৩ সালের শেষের দিকে ঢাকা মেট্রোরেল চালু হতে পারে। ২০২৫ সাল নাগাদ কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত চালু হতে পারে।

ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ সম্পর্কে সচরাচর জিজ্ঞেসিত প্রশ্নোত্তর (FAQ’s)

মেট্রোরেলের ভাড়া কত?

মেট্রোরেলে জনপ্রতি সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। এছাড়াও প্রতি কিলোমিটারের জন্য ভাড়া ৫ টাকা। তবে মুক্তিযুদ্ধাদের জন্য মেট্রোরেল ভাড়া প্রদান করতে হবেনা।

মেট্রোরেল কি সরকারি?

হ্যাঁ,মেট্রোরেল একটি সরকারি পরিবহন ব্যবস্থা। এটি বাংলাদেশের সরকারি কর্মকর্তা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।

মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য কত?

ঢাকা মেট্রোরেলের দৈর্ঘ্য ২১.২৬ কিলোমিটার।

মেট্রোরেলের প্রথম চালক কে?

বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের প্রথম চালক মরিয়ম আফিজা। উত্তরার দিয়াবাড়ীতে থাকা উত্তর নর্থ স্টেশন থেকে রওনা হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী মেট্রোরেলটি আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছানো পর্যন্ত চালক ছিলেন তিনি।

মেট্রোরেলের স্টেশন কয়টি?

ঢাকা মেট্রোরেল বাংলাদেশ এর স্টেশনের সংখ্যা মোট ১০৪টি পরিকল্পিত ও ১৬ টি নির্মাণাধীন। এর মধ্যে রয়েছে পাতাল স্টেশন ৫৩ টি ও উড়াল স্টেশন ৫১ টি।