রমজান মাসের প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল ও দোয়া সমুহ

রমজান মাসের প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল : রমজান মাস হলো সাইয়িদুশ শুহুর বা সকল মাসের সেরা মাস। পবিত্র ও কল্যাণময় রমজান মাসে পবিত্র আল-কোরআন নাজিল হয়েছিল। এ মাস তাকওয়া, সবর ও সংযম প্রশিক্ষণের মাস। রমজান মাস আমাদের জীবনকে সব পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তির সুযোগ দেয়। পবিত্র রমজান মাস হচ্ছে একজন মুমিনের জন্য আল্লাহ তা’আলার অধিক থেকে অধিকতর নৈকট্য লাভের সেরা মাস। এটি দোয়া কবুলের মাস। 

বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) – রমজান মাসে ৪টি আমল বেশি বেশি করতে উৎসাহিত করেছেন। হজরত সালমান ফারসি (রাঃ) বলেন- “শাবান মাসের শেষ দিন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাদের উদ্দেশ্য এ মর্মে বক্তব্য দেন যে- “হে লোক সকল! অবশ্যই তোমাদের সামনে মহান মাস, বরকতময় মাস উপস্থিত। এ মাসে তোমরা ৪টি আমল বেশি বেশি আদায় করবে। এর মধ্যে দুইটি কাজ আল্লাহর জন্য আর দুইটি কাজ তোমাদের নিজেদের জন্য।” কেউ যদি রমজান মাসজুড়ে এই ৪টি আমল বেশি বেশি করে, তাহলে সে দুনিয়া ও পরকাল সফলকাম হবেন।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) হাদীস শরীফে রমজান মাসে নিম্নোক্ত ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করেছেন: 

  • অধিক হারে কালেমার তাসবীহ পাঠ করা।
  • বেশি বেশি তওবাহ-ইস্তেগফার করা।
  • মহান আল্লাহর কাছে জান্নাত চাওয়া।
  • মহান আল্লাহর কাছে জাহান্নাম থেকে মুক্তি চাওয়া।

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবায়ে কেরামকে এসকল আমলগুলো করতে নসিহত পেশ করেছেন।

রমজান মাসের প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল/রমজানে পালন করার জন্য অতিরিক্ত আমল ও তাসবিহ সমূহ

(১) কালেমার তাসবিহ পাঠ করা

ইসলামিক তথ্য অনুসারে, কালেমার সর্বোত্তম তাসবীহ হচ্ছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। অর্থ: “আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই”। তাই রমজান মাসে এই তাসবিহ টি বেশি বেশি পাঠ করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই তাসবিহ মানুষকে তাওহিদের দিকে ধাবিত করে এবং মানুষ সবচেয়ে বড় অপরাধ শিরক থেকে মুক্ত থাকে। তাই কোরআন নাজিলের মাসে মহান আল্লাহর একত্ববাদের স্বীকৃতি দিতেই একনিষ্ঠতার সঙ্গে সঙ্গে বেশি বেশি কালেমার তাসবিহ পাঠ করা উচিত।

(২) সালাতের পর তাসবিহ পাঠ করা

পাঁচ ওয়াক্ত সালাতের পর যে সকল তাসবিহ নিয়মিত পাঠ করার জন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃ) উৎসাহিত করেছেন, সেগুলো অন্যান্য মাসের মতোই রমজান মাসেও পাঠ করা অধিক সওয়াবের। এক্ষেত্রে, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আস্তাগফিরুল্লাহ, লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ ইত্যাদি তাসবিহ গুলো পাঠ করতে পারেন।

(৩) নিম্নোক্ত দোয়াটি পাঠ করা

রমজান মাসের শেষের ১০ দিন এই দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করা যায়:

আরবি: اللهم إنك عفو تحب العفو فاعف عني

বাংলা উচ্চারণ: “আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফু’উন তুহিব্বুল আফওয়া ফা-ফু আন্নি।”

বাংলা অর্থ: “হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল; ক্ষমা করাকে তুমি পছন্দ কর; সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দাও।”

(৪) আল্লাহ তা’আলার দয়া ও রহমত বাচক নামগুলো পড়া

মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯ টি গুণবাচক নামের মধ্যে রহমত ও দয়া নির্দেশক বহু নাম রয়েছে। এ সকল নাম গুলো আত্মস্থ করা, অধিক পরিমাণ তাসবীহ পাঠ করা, এবং নাম গুলোর গুণবাচক অর্থ অনুসারে জীবন গঠন করা মুমিনদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালার রহমত নির্দেশকারী গুণবাচক নাম গুলো হলো:

  • আর রহমানু (অসীম দয়ালু), 
  • আর রহিমু (পরম করুণাময়), 
  • আল ওয়াদুদু (প্রেমময়), 
  • আর রউফু (স্নেহশীল), 
  • আল আজিজু (মমতাময়), 
  • আল বাসিতু (করুণা বিস্তারকারী), 
  • আল মুইজজু (সম্মানদাতা), 
  • আল লাতিফু (করুণাকারী), 
  • আল মুজিবু (প্রার্থনা কবুলকারী), 
  • আর রাজজাকু (রিজিকদানকারী), 
  • আল ওয়াসিউ (দয়া প্রসারকারী),
  • আল কারিমু (অনুগ্রহকারী), 
  • আস সালামু (শান্তিদাতা), 
  • আল মুমিনু (নিরাপত্তাদাতা), 
  • আল মুহাইমিনু (রক্ষাকর্তা), 
  • আল ওয়ালিয়ু (পরম বন্ধু), 
  • আন নাফিউ (কল্যাণকারী), 
  • আল হাদিউ (পথের দিশারি), 
  • আন নাসিরু (সাহায্যকারী), 
  • আল হান্নানু (করুণাশীল), 
  • আল মান্নানু (দয়াদ্র) ইত্যাদি। 

এ সকল গুনবাচক নাম গুলোর পাশাপাশি অন্যান্য নামগুলো নিয়মিত পাঠ করা আমাদের কর্তব্য। পাশাপাশি বাস্তবিক জীবনে এই নামের গুণাবলী প্রয়োগ করলে আল্লাহর প্রিয় বান্দা হওয়া যাবে।

রমজানে আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ইসতেগফার করা 

রমজান মাসে প্রতিটি নেক আমলেরই ৭০ থেকে ৭০০ গুন পর্যন্ত সওয়াব ও ফজিলত বৃদ্ধি করা হয়। এ সময় অন্যান্য নেক আমল গুলোর পাশাপাশি বেশি বেশি ইস্তেগফার করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হয়ে এবং গুনাহ মুক্ত জীবনযাপন করার পরেও দৈনিক অন্তত ৭০ বার ইস্তেগফার করতেন। গুনাহমুক্ত জীবনের অন্যতম উপায় হচ্ছে তাওবাহ ও ইসতেগফার করা। তাই রমজান যেহেতু দোয়া কবুলের মাস, সেহেতু আমাদের কৃতকর্মের জন্য এই মাসে বেশি বেশি ইস্তেগফার পড়া উচিত। 

এ কারণেই কোরআন-সুন্নায় বেশি বেশি তাওবাহ-ইস্তেগফার করার ব্যাপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ইস্তেগফারকারী সম্পর্কে মহান আল্লাহ তা’আলা পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন: 

আরবি: وَمَن يَعْمَلْ سُوءًا أَوْ يَظْلِمْ نَفْسَهُ ثُمَّ يَسْتَغْفِرِ اللّهَ يَجِدِ اللّهَ غَفُورًا رَّحِيمًا

বাংলা অর্থ: “যে গুনাহ করে/ নিজের উপর জুলুম করে, অতপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল, করুণাময় পায়।” (সুরা নিসা, আয়াত: ১১০)

সুরা নিসার ১৪৫-১৪৬ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তা’আলা আরো বলেন: “নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে অবস্থান করবে এবং তুমি কখনও তাদের জন্য সাহায্যকারী পাবে না। কিন্তু যারা তওবাহ করে ও সংশোধন হয় তারা ব্যতিত।”

একইভাবে, সুরা নুর এর ৩১ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তা’আলা তওবাকারীদের সম্পর্কে বলেন:

আরবি: وَتُوْبُوْا إِلَى اللهِ جَمِيْعاً أَيُّهَا الْمُؤْمِنُوْنَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ

বাংলা অর্থ: “হে মুমিনগণ! তোমরা সকলেই মহান আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পারো।”

রমজান মাসের যে সকল ইস্তেগফার গুলো করা অধিক ফজিলতপূর্ণ

‘আউযু বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন গাযাবিহি ওয়া ইকাবিহি ওয়া শাররি ইবাদিহি ওয়া মিন হামাযাতিশ শায়াতিনি আইঁ ইয়াহযুরুন’ (সুনানে আবু দাউদ)। অর্থ: আমি আল্লাহতায়ালার পরিপূর্ণ বাক্যের মাধ্যমে তার ক্রোধ ও আযাব হতে, তার বান্দার শত্রুতা হতে এবং শয়তানদের প্ররোচনা হতে সুরক্ষার জন্য আল্লাহতায়ালার আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তারা আমার কাছেই না আসতে পারে।

(১)

আরবি: أَستَغْفِرُ اللهَ

বাংলা উচ্চারণ: “আস্তাগফিরুল্লাহ।”

বাংলা অর্থ: “আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।”

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রতি ওয়াক্ত ফরজ নামাজের সালাম ফেরানোর পর এ ইসতেগফারটি ৩ বার পাঠ করতেন। (মিশকাত)

(২)

আরবি: أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ

বাংলা উচ্চারণ: “আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।”

বাংলা অর্থ: “আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।”

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) প্রতিদিন ৭০ বারের অধিক তাওবাহ ও ইসতেগফার করতেন। (বুখারি) তাই আমাদের জন্যও এই ইসতেগফারটি প্রতিদিন ৭০/১০০ বার পড়া অতি গুরুত্বপূর্ণ।

(৩)

আরবি: رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ

বাংলা উচ্চারণ: “রাব্বিগফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।”

বাংলা অর্থ: “হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।”

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোয়া ১০০ বার পড়েছেন। (আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ, তিরমিজি, মিশকাত)

(৪)

আরবি: أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ الَّذِي لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ

বাংলা উচ্চারণ: “আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়্যুল কইয়্যুমু ওয়া আতুবু ইলায়হি।”

বাংলা অর্থ: “আমি ওই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাবুদ নেই; তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই (তাওবাহ করে) ফিরে আসি।”

আরও পড়ুন: নামাযের গুরুত্বপূর্ণ মাসলা – মাসাইল ও প্রয়োজনীয় দো’আ

একজন মুমিন ব্যক্তি দিনের যে কোনো ইবাদত-বন্দেগি তথা ক্ষমা প্রার্থনার সময় এভাবে তাওবাহ-ইসতেগফার করতে পারে।। হাদিস শরীফে উল্লেখিত হয়েছে, “উপরোক্ত বর্নিত নিয়মে তাওবাহ-ইস্তেগফার করলে, আল্লাহ তা’আলা তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পলায়নকারী হয়।” (আবু দাউদ, তিরমিজি, মিশকাত)

(৫) সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার 

সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার হলো আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সবচেয়ে বড় তওবা করার দোয়া ও ইস্তিগফার। এই ইস্তেগফারটি অনেক বেশি ফজিলতপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ ‌(সাঃ) বলেছেন- “যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে সকালে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে, সে ব্যক্তি ঐ দিন মৃত্যুবরণ করলে জান্নাতে প্রবেশ করবে। যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে সকালে সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার পাঠ করবে, সে ব্যক্তি ঐ রাতে মৃত্যুবরণ করলে জান্নাতে প্রবেশ করবে।”

সাইয়্যেদুল ইস্তিগফারটি হলো:-

আরবি: اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

বাংলা উচ্চারন: “আল্লা-হুম্মা আনতা রাব্বি। লা-ইলাহা ইল্লা আনতা। খালাক্বতানি ওয়া আনা আব-দুকা। ওয়া আনা আলা আহ-দিকা। ওয়া ওয়া’দিকা মাস-তাত্বা’তু। আ’উযু বিকা মিন শাররি মা সানা’তু। আবুয়ু লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা। ওয়া আবুয়ু লাকা বি জাম্বি। ফাগ-ফিরলী ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।”

বাংলা অর্থ: “হে আল্লাহ! শুধুমাত্র আপনিই আমাদের প্রতিপালক। আপনি ব্যতীত আর কোনো ইলাহ্ নেই। আপনিই আমার সৃষ্টিকর্তা এবং আমি আপনারই দাস। আমি আপনার সঙ্গে কৃত ওয়াদা ও অঙ্গীকারের ওপর সাধ্যানুযায়ী অটল ও অবিচল রয়েছি। 

আমি আমার কৃতকর্মের সব অনিষ্ট হতে আপানার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা চাইছি। আমার উপর আপনার দানকৃত সব নেয়ামতের স্বীকার করছি। আমি আমার সব গুনাহ স্বীকার করছি। অতএব, আপনি আমাকে মাফ করে দিন। কেননা, আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহ মাফ করতে পারবে না।” 

বেশি বেশি তাওবাহ-ইস্তেগফার করলে যে সকল ফজিলতগুলো পাওয়া যায়

মুমিন বান্দার মহান আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার করলে, আল্লাহ তাআলা জীবনের যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দিবেন। তিনি খাস নিয়তে তাওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল। যারা বেশি বেশি তওবা করেন আল্লাহ তাদেরকে কঠিন বিপদ থেকেও রক্ষা করেন। এছাড়াও-

  • তাওবাকারীদের আয় রোজগার বৃদ্ধি পায় ও কখনো অভাবে পতিত হয় না।
  • আল্লাহ তা’আলা তার সকল নেক চাওয়াগুলো পূরণ করেন।
  • কোন দেশে যদি বড় বিপর্যয় নেমে আসে, তখনো আল্লাহ তা’আলা তাওবাকারীদের রক্ষা করবেন।
  • তীব্র ঝড়-বৃষ্টি ও বজ্রপাতকালীন সময়েও তাওয়াকারীদের কোন ক্ষতি হয় না। 
  • দুনিয়ার জীবন সুখময় করার পাশাপাশি পরকালে আল্লাহ তওবাকারীদের জান্নাত নসিব করবেন।

রমজানে মহান আল্লাহর কাছে জান্নাত প্রার্থনা করা

মুমিনের আসল ঠিকানা হলো জান্নাত। প্রতিটি মুসলমানের সর্বোচ্চ সফলতা তখনই অর্জন হবে, যখন সে কিয়ামতের দিন সকল বাধা বিপত্তি পেরিয়ে এবং পুলসিরাত পেরিয়ে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) -এর সাথে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে। জান্নাত চির সুখের স্থান। সেখানে মানুষের তৃপ্তির জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা যাবতীয় সকল কিছুই সৃষ্টি করে রেখেছেন অপরূপ ভাবে। হাদিস শরীফে জান্নাত লাভের প্রার্থনা করার কথা বিশেষভাবে উল্লেখিত হয়েছে। 

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন- “যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কোনো কিছু চায় না আল্লাহ তাআলা তার প্রতি রাগান্বিত হন।” তাই দোয়া কবুলের মাস রমজান মাসে রমজান মাসের প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল জেনে জান্নাত লাভের জন্য আমাদের বেশি বেশি প্রার্থনা করতে হবে।  

রমজানে মহান আল্লাহর কাছে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি চাওয়া

পৃথিবীতে মহান আল্লাহ তায়ালার অবাধ্য হয়ে জীবন যাপন করলে, পরকালে তাদের জন্য রয়েছে চির শাস্তির স্থান জাহান্নাম। প্রকৃতপক্ষে আমরা মানুষ সকল কোন না কোন ভাবে নানারকম পাপ কাজে লিপ্ত হয়। আমাদের পাপের বোঝা অত্যন্ত ভারি এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও রহমত ছাড়া জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তাই রমজানে মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা এবং জাহান্নামের আজাব থেকে মুক্তি চাইতে হবে। আল্লাহ তওবাকারীদের ভালবাসেন এবং পরকালে তাদের জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করবেন।

জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া

(১) 

আরবি: اَللَّهُمَّ اَدْخِلْنَا الْجَنَّةَ وَ اَجْرِنَا مِنَ النَّارِ

বাংলা উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা আদখিলনাল জান্নাতা ওয়া আঝিরনা মিনান নার।”

বাংলা অর্থ: “হে আল্লাহ! আমাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দাও।”

(২) 

আরবি: اَللهُمَّ انَّ نَسْئَلُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ

বাংলা উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনান নার।”

বাংলা অর্থ: “হে আল্লাহ! আপনার কাছে জান্নাত চাই এবং জাহান্নামের আগুন থেকে আশ্রয় চাই।”

রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ঘোষণা করেছেন- “যে ব্যক্তি সকাল-সন্ধ্যা ৩ বার জান্নাতের আশা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করবে, জান্নাত-জাহান্নামও আল্লাহর কাছে ওই ব্যক্তির দোয়া কবুলে সুপারিশ করবে।”

ইফতারের দোয়া – তারাবির নামাযের দোয়া ও নিয়ত

নিত্য প্রয়োজনীয় দোয়া সমূহ। আরবি-বাংলা

লাইলাতুল কদরের নামাজের নিয়ম, নিয়ত, দোয়া ও ফজিলত

দোয়া কুনুত – আরবি উচ্চারণ ও বাংলা অর্থসহ

শেষকথা

মহানবী (সাঃ) বলেছেন, “রোজাদারের নিদ্রা ইবাদততুল্য, চুপ থাকা তাসবিহ-তাহলিলতুল্য, আমল ইবাদত সওয়াব হাসিলে বেশি অগ্রগণ্য, দোয়া কবুলযোগ্য ও তার গুনাহ ক্ষমার যোগ্য।’ (বায়হাকি) তাই রমজান মাসের প্রয়োজনীয় মাসলা মাসায়েল  ও উপরোক্তভাবে রমজান মাস অতিবাহিত করতে মহান আল্লাহর রহমত কামনা করছি।