সাজেক ভ্যালি – কিভাবে যাবেন? হোটেল-রিসোর্ট ও ভ্রমণ খরচ

সাজেক ভ্যালি বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য ও দর্শনীয় স্থান সাজেক ভ্যালি। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের মনোরম পরিবেশ এটি।

সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা থেকে প্রায় ১৮০০ ফিট উঁচু সাজেক ভ্রমণ এর কেন্দ্রস্থল। পাহাড়ের উচ্চতা থেকে আশেপাশের অন্যান্য পাহাড়, ঘন বান দ্বারা বেষ্টিত সবুজের সমারোহ, আকাশের মেঘের নিবিড় ভাবে ঘুরে বেড়ানো সবমিলিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সেরা একটি স্থান সাজেক ভ্যালি।

ভ্রমণপিপাসু মানুষের জন্য সাজেক ভ্যালিকে বাংলার ভূস্বর্গ নামে অভিহিত করেছেন অনেকেই। পাহাড়ের সারিগুলো যেন সমুদ্রের ঢেউ আর তুলার মতোই ভেসে বেড়ায় সাদা মেঘ। সকাল বিকাল ভিন্ন রঙের সাজে মায়াবী এই সাজেক ভ্যালি। প্রতিবছর হাজারো মানুষের ভিড় জমে সাজেক ভ্যালির সৌন্দর্য দেখতে। হয়তো আপনিও সেই প্রকৃতির মায়াবী ভালোবাসা পেতে চান। তাই সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত, কিভাবে যাবেন সাজেক ভ্রমণ করতে ও ভ্রমণের আদ্যোপান্ত তথ্য নিয়েই আজকের আলোচনা।

 বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য ও দর্শনীয় স্থান সাজেক ভ্যালি। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক দৃশ্যের মনোরম পরিবেশ এটি।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমন।

সাজেক ভ্যালি কোথায় অবস্থিত

সাজেক উপত্যকা বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এটি তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সবুজ পাহাড় এবং মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যের জন্য পরিচিত। সাজেক উপত্যকার নিকটতম শহর খাগড়াছড়ি, যা প্রায় ৬৭ কিলোমিটার দূরে। রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও সাজেক ভ্রমণ করতে যাওয়ার জন্য খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা হয়ে যাতায়াত করা সহজ।

সাজেক ভ্যালিতে কি দেখবেন

প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের জন্য সম্পূর্ণ সাজেক ভ্যালিটাই একটি অত্যন্ত মনোরম দর্শনীয় স্থান। চারপাশের মনোরম পাহাড় ও তার সাথে সাদা তুলোর মত মেঘের ভ্যালি যে কাউকেই মুগ্ধ করতে যথেষ্ট। দিন কিংবা রাত যে কোন সময়ই সাজেক প্রকৃতির অপরূপ মায়ার রঙে রাঙিয়ে তোলে সকলকেই।

এটি এমনই এক আশ্চর্যকর স্থান যেখানে একই সাথে প্রকৃতির তিন রকম রূপের সান্নিধ্য পাওয়া যায়। সেখানে কখনো অনুভূত হবে খুব গরম, কখনো ভিজে যাবেন হঠাৎ করে আসা বৃষ্টিতে অথবা নিমেষের মধ্যেই আপনার চারপাশ ঢেকে যাবে সাজেক ভ্যালির ঘন মেঘের কুয়াশার চাদরে। চারিদিকে মেঘের তুলোর মতো উড়া, এখান থেকে ওখানে, পাহাড় থেকে পাহাড়ে আপনার মনে শিহরন জাগানো আনন্দ দেবে।

সাজেকের সূর্যোদয় প্রকৃতিতে ঢেলে দেয় অপার সৌন্দর্যের রূপ। সাজেক ভ্রমণ এ গেলে ভোরের সূর্যোদয়ের দৃশ্যটি মিস করা যাবেনা কোনভাবেই। চারিদিকে হালকা কুয়াশায় ঘন মেঘের মেলা এবং সূর্যোদয়ের আলো একসাথে অন্যরকম সৌন্দর্যের দেখা দেয়। এই দৃশ্য উপভোগ করার জন্য খুব ভোরেই সূর্যোদয় দেখার অপেক্ষায় যেতে হবে হ্যালিপেডে। সেখান থেকেই প্রকৃতির নিবিড় দৃশ্য ও সূর্যোদয় সবচেয়ে সুন্দর ভাবে দেখা যায়। বিকেলেও দেখতে পাবেন সূর্যাস্তের রঙিন রূপ। সন্ধ্যায় দেখা যায় পরিষ্কার আকাশে অপরূপ সৌন্দর্যের প্রাণ জুড়ানো কোটি কোটি তারা। এখান থেকেই পরিষ্কার আকাশে স্পষ্টভাবে দেখতে পারেন মিল্কিওয়ে বা ছায়াপথ।

বর্তমানে সাজেকের মূল আকর্ষণ হচ্ছে কংলাক পাহাড়ে অবস্থিত চট্টগ্রামের কংলাক পাড়া। এটি সাজেক ভ্যালি শেষ গ্রাম এবং লুসাই জনগোষ্ঠীর আবাসের এলাকা।

এখানে বাঁশের ঘর এবং বসবাসকারী মানুষের ঐতিহ্যবাহী জীবনধারা সাজেক ভ্রমণের একটি বড় আকর্ষণ। কংলাত পাড়া থেকেই দেখা যায় ভারতের কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তিস্থল লুসাই পাহাড়। এছাড়াও রয়েছে সাজেক ভিউ পয়েন্ট, যা সাজেক ভ্যালির অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি স্পট। এখান থেকে পাহাড়, নদী এবং উপত্যকার একটি মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যায়।

রুইলুই পাড়া উপত্যকায় অবস্থিত আরেকটি সুন্দর গ্রাম। এখানে মিলবে কমলার বাগান ও বসবাসকারী মানুষের ঐতিহ্যবাহী জীবনধারার দেখা। চাইলেই সেই রুইলুই পাড়া থেকে ২ ঘণ্টা সময় নিয়ে ট্রেকিং করে কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তিস্থল কমলক ঝর্না দেখে আসা যায়। ঝর্নাটি তৈসা ঝর্না বা সিকাম তৈসা ঝর্ণা নামেও স্থানীয়দের কাছে পরিচিত।

সাজেকের উপত্যকায় বেয়ে যাওয়া নদীতে নৌকায় চড়ে মাছ ধরার আনন্দ উপভোগ করে অনেকেই। সেইখানে উপত্যকায় বসবাসকারী বাওম আদিবাসী গোষ্ঠী নৌকার মাধ্যমে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের একটি আলাদা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে। সাজেক ভ্রমণ এ সেখানে তাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য ও সঙ্গীতও উপভোগ করতে পারবেন।

দিন বা রাতের যেকোন সময় সাজেক যেন রং তুলিতে আঁকা ছবির মত। সময় যত যায় সাজেকের সৌন্দর্য ততই যেন বাড়তে থাকে। সাজেক ভ্যালি ট্রেকিং এর জন্য একটি দারুণ সুযোগ। এর উপত্যকায় বেশ কয়েকটি ট্রেকিং ট্রেইল রয়েছে। যা আপনি অবশ্যই ঘুরে দেখতে পারেন। সাজেক উপত্যকায় ক্যাম্পিং করার জন্য জনপ্রিয় একটি স্থান। চাইলে বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পিংও করতে পারেন সেখানে।

সাজেক থেকে ফেরার পথে পাশাপাশি ঘুরে আসতে পারেন দীঘিনালা ঝুলন্ত ব্রিজ, দীঘিনালা বনবিহার ও হাজাছড়া ঝর্ণার মতো সুন্দর স্থান গুলো।

প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের জন্য সম্পূর্ণ সাজেক ভ্যালিটাই একটি অত্যন্ত মনোরম দর্শনীয় স্থান। চারপাশের মনোরম পাহাড় ও তার সাথে সাদা তুলোর মত মেঘের ভ্যালি যে কাউকেই মুগ্ধ করতে যথেষ্ট।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমন।

সাজেক ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা সেরা স্থানগুলোর একটি সাজেক। যেকোনো সময়েই বর্ণিল সাজে সেজে থাকে সাজেক। তবে সাজেক ভ্রমণ এ মেঘের খেলা দেখতে সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় সময় হলো জুলাই মাস থেকে নভেম্বর মাস।

তবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসেও সাজেক ভ্যালির আবহাওয়া শুষ্ক, রোদ ঝলমলে এবং ঠান্ডা থাকে। এই সময়ে, উপত্যকায় ১০°C থেকে ২০°C পর্যন্ত একটি মনোরম তাপমাত্রা বজায় থাকে যা ট্রেকিং, হাইকিং এবং ক্যাম্পিং এর মতো আউটডোর ক্রিয়াকলাপ গুলোর জন্য আদর্শ৷ আকাশ ও থাকে পরিষ্কার।

বর্ষার মৌসুমে জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত উপত্যকায় ভারী বৃষ্টিপাত হয় এবং রাস্তাগুলোতে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়ে এবং পাহাড় ধ্বসেরও সম্ভাবনা থাকে। তাই এ সময় সাজেক ভ্যালিতে না যাওয়াই উচিত।

যেকোনো সময়েই আপনি সাজেক ভ্রমণ এ একটি ভালো এক্সপেরিয়েন্স পাবেন। তবে গ্রীষ্মকালীন সময়ে ভিড় কম থাকে এবং খরচ তুলনামূলক কম হয়।

সাজেক যাবার উপায়

সাজেক বাংলাদেশের রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি জেলার দিঘীনালা দিয়ে সাজেকে যেতে পারবেন সহজেই। তাই সাজেক ভ্রমণ করতে প্রথমেই আপনার জেলা থেকে খাগড়াছড়ি চলে যেতে হবে। ঢাকা থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ি যেতে চাইলে বিভিন্ন বাস, যেমন- সৌদিয়া, শ্যামলী, শান্তি পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, ঈগল, এস আলম এন্টারপ্রাইজ ইত্যাদি বাসগুলো উল্লেখযোগ্য। এগুলো নন এসি বাস এবং এর বাস ভাড়া ৬০০-৭৫০ টাকা।

এসি বাসে ঢাকা থেকে খাগড়াছড়ি ভ্রমণ করতে হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী, দেশ ট্রাভেলস, ইকোনো সার্ভিস, রিল্যাক্স ট্রান্সপোর্ট ইত্যাদি বাসে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা ভাড়া যেতে পারবেন। সেন্টমার্টিন হুন্দাই এক্সপ্রেসে নন এসি বিজনেস ক্লাস- ৮৫০ টাকায় যেতে পারবেন। প্রায় সবগুলো বাস রাতে ১০ টার সময় যাত্রা শুরু করে। ঢাকার গাবতলী ও কলাবাগান সহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই সকল পরিবহনের কাউন্টারে উপস্থিত হয়ে টিকিট সংগ্রহ করুন।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার চান্দের গাড়ির ভাড়ার তালিকা

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যেতে প্রায় ৭০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে হয়। চাঁদের গাড়ি বা জীপ গাড়িতে একই সাথে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ জন করে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর থেকে সাজেক ভ্রমণ করতে আসা যায়।

জীব সমিতি ও পার্বত্য যানবাহন মালিক কল্যাণ সমিতি, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার ভাড়ার তালিকা নির্ধারণ করেছে। তাহলো-

যাত্রার ধরন জীপ গাড়ি/চাঁদের গাড়ি মাহিন্দ্রা গাড়ি
সাজেক আসা-যাওয়া ৫৫০০ ৬০০০
সাজেকে ১ রাত্রি যাপন ৭,৭০০ ৮,০০০
সাজেকে ১ রাত্রি যাপন,
রিচাং ঝর্ণা, ঝুলন্ত ব্রিজ ও আলুটিলা সহ
৯,০০০ ১০,৫০০
সাজেকে ২ রাত্রি যাপন ৯,৬০০ ১১,১০০
সাজেকে ২ রাত্রি যাপন,
রিচাং ঝর্ণা, ঝুলন্ত ব্রিজ ও আলুটিলা সহ
১১,৫০০ ১৩,৫০০

খাগড়াছড়িতে জিপ গাড়ির কাউন্টার পাবেন। সেখানে ভাড়া নির্ধারন করা। আপনি কত সময় সেখানে থাকতে চান তা বলে পূর্বেই ভাড়া কম বেশি নির্ধারণ করে নিন। ছুটির দিনে গেলে খাগড়াছড়িতে জিপ পেতে সমস্যা হয় তাই পূর্বেই ঠিক করে যান। খাগড়াছড়ি থেকে জিপ গাড়িতে করে সাজেক যেতে প্রায় তিন ঘণ্টার মতো সময় লাগে। ছোট গ্রুপ হলে খাগড়াছড়ির শাপলা চত্বর কাউন্টারে গিয়ে অন্য গ্রুপের সাথে যেতে পারবেন।

সাজেক ভ্রমণ এর জন্য আপনি চাইলে প্রথমে খাগড়াছড়ি থেকে বাসে করে দীঘিনালায় যেতে পারবেন। খাগড়াছড়ি থেকে দীঘিনালা দূরত্ব হবে প্রায় ২৩ কিলোমিটার। সেখানে বাস ভাড়া ৪৫ টাকা এবং মোটরসাইকেল ভাড়া ১০০ টাকা। পরবর্তীতে দীঘিনালা থেকে সাজেক যেতে পারবেন। তবে দীঘিনালা থেকে সাজেক যাওয়ার সেনাবাহিনীর এসকোর্ট শুরু হয় সকাল ১০ টা এবং বিকাল ৩ টা। দীঘিনালা থেকে নিরাপদে সাজেক যেতে হলে এই এসকোর্টের সাথেই নির্দিষ্ট সময়ে যেতে হবে।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার সিএনজি ভাড়ার তালিকা

আপনাদের গ্রুপ ছোট হলে সিএনজিতে করে খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক ভ্রমণ এ যেতে পারবেন। তবে সিএনজিতে যাওয়া অনেক ঝুকিপূর্ণ। সিএনজিতে করে সাজেক ঘুরে আসার সময় সন্ধ্যার পূর্বেই বাঘাইহাট আর্মি ক্যাম্প পার হতে হবে। তা না হলে জবাবদিহিতা করতে হবে।

সিএনজি ভাড়ার তালিকা-

যাত্রার ধরন সিএনজি ভাড়া
শুধু যাওয়া ২,৫০০
যাওয়া-আসা ৩,৫০০
১ রাত থাকা ৪,৫০০
সাজেকে ১ রাত্রি যাপন,
রিচাং ঝর্ণা, ঝুলন্ত ব্রিজ ও আলুটিলা সহ
৫,৪০০
সাজেকে ২ রাত্রি যাপন ৫,৪০০
সাজেকে ২ রাত্রি যাপন,
রিচাং ঝর্ণা, ঝুলন্ত ব্রিজ ও আলুটিলা সহ
৬,৫০০

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক বাইক ভাড়া

একা বা দুইজন হলে বাইকে করে সাজেক যেতে পারেন। এক্ষেত্রে খাগড়াছড়ি থেকে না উঠে দীঘিনালা থেকে উঠতে পারেন। দীঘিনালা থেকে সাজেক যেতে বাইক ভাড়া হবে প্রায় ২০০০ টাকা। একটি বাইকে দুইজন যেতে পারবেন।

চট্টগ্রাম থেকে সাজেক ভ্রমণ

চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ি যেতে হবে। তার জন্য চট্টগ্রামের কদমতলী বাস স্ট্যান্ড থেকে বিআরটিসি এসি বাসে যেতে পারবেন। দিনে চারবার বাস ছাড়া হয় এবং ভাড়া হবে ৩০০-৩৫০ টাকা। অথবা চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড় থেকে শান্তি পরিবহন বাস এবং অন্যান্য লোকাল নন এসি কিংবা এসি দুই ধরনের বাসেই যেতে পারবেন। সেখান থেকে শান্তি পরিবহনের নন এসি বাস ভাড়া ২০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৩৫০ টাকা। এক ঘন্টা পর পর এ বাস পাবেন। চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি যেতে প্রায় ৪-৫ ঘন্টা সময় লাগবে। খাগড়াছড়ি থেকে পরবর্তীতে সাজেক ভ্রমণ এ যেতে পারবেন।

রাঙ্গামাটি থেকে সাজেক ভ্রমণ

রাঙ্গামাটি থেকে সড়ক ও নৌপথে আলাদা রুটে সাজেক যেতে পারবেন। রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে ১০ টার মধ্যে বাঘাইছড়ির লঞ্চ ছাড়া হয়। লঞ্চে করে যেতে প্রায় ৫-৬ ঘন্টা সময় লাগে। সেখানে লঞ্চ ভাড়া ১৫০-২৫০ টাকা।

সড়কপথে রাঙ্গামাটি বাস টার্মিনাল থেকে সকাল ৭ টা ৩০ মিনিটে বাস ছাড়ে। বাসে যেতে ৬-৭ ঘন্টা সময় লাগে এবং জন প্রতি ভাড়া ২০০ টাকা। তারপর বাঘাইছড়ি পৌঁছে জিপ গাড়ি, সিএনজি কিংবা মোটর সাইকেলে করে সাজেক যেতে পারবেন।

কক্সবাজার থেকে সাজেক ভ্রমণ

কক্সবাজার থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ি গিয়ে, সেখান থেকে সাজেক যাওয়া যায়। কক্সবাজার থেকে শান্তি পরিবহনের বাসে ও অন্যান্য বাস খাগড়াছড়ির রুটে চলাচল করে। কক্সবাজার থেকে রাত ৯ টা‌ ও ১০ টাই খাগড়াছড়ি যেতে বাস যাত্রা শুরু করে। সেক্ষেত্রে নন-এসি বাসের ভাড়া ৫৫০ টাকা।

আরও পড়ুন: কক্সবাজার ভ্রমণের উপযুক্ত সময় ও দর্শনীয় স্থান

সাজেকে থাকার ব্যবস্থা

সাজেকে থাকার ব্যবস্থা হিসেবে রয়েছে প্রায় শতাধিক রিসোর্ট ও কটেজ। সাজেকে ১ রাত্রি যাপন করতে চাইলে রিসোর্ট ভেদে ১৫০০ থেকে ১৫,০০০ পর্যন্ত ভাড়া লাগবে। ছুটির সময় যেতে চাইলে রুম পাওয়া মুশকিল। তাই প্রায় মাঝখানেক আগে থেকেই রুম বুক করে রাখতে পারেন। অথবা, কম খরচে থাকতে চাইলে আদিবাসী গুলোতে সাজেকে থাকতে পারেন। সে ক্ষেত্রে খরচ অনেক কম হবে। এছাড়াও বর্তমানে নতুন নতুন অনেক কটেজ তৈরি হচ্ছে প্রতিনিয়তই। সাজেকের সব কটেজ থেকেই সুন্দর ভিউ পাওয়ার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছে।

সাজেকের হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ

সাজেকে অনেক রিসোর্ট, হোটেল ও কটেজ রয়েছে। তবে কোন রিসোর্ট টি আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী এবং কোনটি থেকে ভালো ভিউ পাওয়া যাবে তা বাছাই করে নিতে হবে। সাজেক ভ্রমণ এ থাকার সেরা কিছু রিসোর্ট ও কটেজ নিয়ে নিচে সংক্ষিপ্ত তথ্য প্রদান করা হলো-

সাজেক রিসোর্ট (Sajek Resort)

সাজেক রিসোর্ট টি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত। এখানে নন এসি রুম গুলোর ভাড়া সিজন ভেদে ১০,০০০- ১৫,০০০ টাকা। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা অথবা যে কোন প্রথম শ্রেণীর সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য রয়েছে ডিসকাউন্ট। থাকার পাশাপাশি এখানে খাবারের ব্যবস্থাও রয়েছে। এর দ্বিতীয় তলায় চারটি কক্ষ রয়েছে। এখানে অবশ্যই আগে থেকে বুক করে যেতে হয়, অন্যথায় রুম না পাবার সম্ভাবনা বেশি।

সাজেক ভ্রমণে এই রিসোর্ট বুক করতে যোগাযোগ করুন- ৮৪৭-০৭০৩৯৫

মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট (Meghpunji Resort)

 মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট। সুন্দর ভিউ পাওয়ার জন্য মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট একটি আদর্শ জায়গা। মেঘপুঞ্জি রিসোর্টে মোট চারটি কটেজ রয়েছে, যার প্রত্যেকটি একটি আরেকটি থেকে আলাদা।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমন।

সুন্দর ভিউ পাওয়ার জন্য মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট একটি আদর্শ জায়গা। মেঘপুঞ্জি রিসোর্টে মোট চারটি কটেজ রয়েছে, যার প্রত্যেকটি একটি আরেকটি থেকে আলাদা। কলেজগুলো পর্যটকদের সম্পূর্ণ আলাদাভাবে সাজেকের সৌন্দর্য উপভোগ করার মতো করেই তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি কটেজের ভেতরে আছে একটি কাপল বেড এবং বাড়তি ফ্লোরিং এর ব্যবস্থা। একটি কটেজে সহজেই চারজন থাকতে পারবে। প্রতিটি কটেজে রয়েছে ২৪ ঘন্টা পানি, বিদ্যুতের সুবিধা, বিদ্যুৎ চলে গেলে রয়েছে জেনারেটরের সুবিধা, আছে অত্যাধুনিক টয়লেট, কটেজ গুলোতে রয়েছে আলাদা আলাদা বারান্দা। ৪ টি কটেজের মধ্যে-

  • তারাশা‌ কটেজ- ৪,৫০০ টাকা।
  • পূর্বাশা, রোদেলা ও মেঘলা কটেজ গুলোর ভাড়া- ৪,০০০ টাকা।

সাজেক ভ্রমণ এ মেঘপুঞ্জি রিসোর্টে বুকিং দিতে যোগাযোগ করুন- ০১৮১৫-৭৬১০৬৫।

রুন্ময় রিসোর্ট (Runmoy Resort)

এটিও সাজেকের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য অন্যতম। রুম্ময় রিসোর্টে মোট ৫ টি রুম আছে। প্রতিটি রুমে ২ জন করে থাকা যায়। এর নিচ তলায় তিনটি কক্ষ রয়েছে। নিচ তলার রুম ভাড়া ৪৪৫০ টাকা। তবে প্রয়োজনে ৬০০ টাকা অতিরিক্ত দিয়ে অতিরিক্ত বেড নিতে পারবেন। উপরের তলায় দুইটি কক্ষ রয়েছে। সেগুলোর ভাড়া হবে ৪৯৫০ টাকা। এর পাশাপাশি এই রিসোর্টে ৪ টি তাবু আছে, প্রতি তাঁবুতে চারজন করে থাকতে পারবেন।

সাজেক ভ্রমণ এ রুন্ময় রিসোর্টে বুক দিতে যোগাযোগ করতে পারেন- ০১৮৬২-০১১৮৫২।

মেঘ মাচাং রিসোর্ট (Megh Machang Resort)

রিসোর্ট থেকে সাজেকের সেরা ভিউ পেতে পর্যটকদের কাছে প্রিয় রিসোর্ট মেঘমাচাং রিসোর্ট। এই রিসোর্টে মোট পাঁচটি কটেজ আছে। রিসোর্টের কিছু কটেজ কাঠের এবং কিছু বাশের তৈরি। প্রতিটি কটেজ থেকেই বাইরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সঠিকভাবে উপভোগ করা যায়। প্রতিটি কটেজের সাথে আছে এটাচ বাথরুমের সুবিধা। কটেজে রয়েছে ফ্যান এর ব্যবস্থা এবং সরাসরি বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় কটেজ গুলোতে সোলার পাওয়ার দ্বারা ব্যাকআপ দেওয়া হয় ২৪ ঘন্টা। এবং জেনারেটর দেওয়া হয় সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত। সাধারণত কাঠের কটেজ গুলোর ভাড়া ৪,০০০ টাকা এবং ছুটির দিনে এগুলোর ৪,৫০০ টাকা ভাড়া হয়। বাঁশের তৈরি কটেজ গুলোর ভাড়া ৩,৫০০ টাকা এবং ছুটির দিনে এগুলোর ৪,০০০ টাকা ভাড়া হয়। প্রতি কটেজে সর্বোচ্চ চার থেকে পাঁচজন থাকতে পারবেন।

সাজেক ভ্রমণ এ মেঘমাচাং রিসোর্টে বুক করতে যোগাযোগ করতে পারেন- ০১৮২২-১৬৮৮৭৭।

রুংরাং রিসোর্ট (Resort RungRang)

 সাজেক ভ্রমণ এর সেরা রিসোর্ট গুলোর একটি রুংরাং রিসোর্ট। রিসোর্টে বসেই সারি সারি পাহাড় ও মেঘের উড়োউড়ি দেখতে পাবেন।
সাজেক ভ্যালি ভ্রমন

সাজেক ভ্রমণ এর সেরা রিসোর্ট গুলোর একটি রুংরাং রিসোর্ট। রিসোর্টে বসেই সারি সারি পাহাড় ও মেঘের উড়োউড়ি দেখতে পাবেন। রিসোর্ট এর ভেতরটা নান্দ্যনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইনের সাজানো। রিসোর্টে আছে ৪ টি ডাবল রুম ও ৪ টি কাপল রুম। সাধারণভাবে ডাবল রুম গুলোর ভাড়া হয় ২৮০০ টাকা এবং ছুটির দিনে ভাড়া হয় ৩৫০০ টাকা। কাপল রুম গুলোর সাধারণ ভাড়া ২০০০ টাকা তবে ছুটির দিনে ভাড়া হয় ২৮০০ টাকা।

রুংরাং রিসোর্টে বুকিং এর জন্য যোগাযোগ করুন- ০১৮৮৪-৭১০৭২৩, ০১৮৬৯৬৪৯৮১৭

ম্যাডভেঞ্চার রিসোর্ট (Madventure Resort)

ম্যাডবেঞ্চার নাম থেকেই বোঝা যায় এখান থেকে প্রকৃতির পাগল করা সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। এই রিসোর্টের প্রতিটি তলায় রয়েছে প্রশস্ত বারান্দা। রিসোর্টে পেয়ে যাবেন ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা। ম্যাডভেঞ্চার রিসোর্টে প্রিমিয়াম কাপল রুম ও কাপল ক্লাসিক রুম এবং ডবল ক্লাসিক রুম নামের ভাগ রয়েছে। প্রিমিয়াম কাপল রুম ভাড়া ৪০০০ টাকা, কাপল ক্লাসিক রুম ভাড়া ৩৫০০ টাকা, একইভাবে ডাবল ক্লাসিক রুম ভাড়া ৩৫০০ টাকা। তবে সাজেক ভ্রমণ এ ছুটির দিনগুলোতে এবং সাধারণ দিনগুলোতে ভাড়ার কিছুটা তারতম্য হয়।

ম্যাডভেঞ্চার রিসোর্টে বুকিং করতে যোগাযোগ করুন- ০১৮৮৫৪২৪২৪২

জুমঘর ইকো রিসোর্ট (Jumghor Eco Resort)

জুমঘর কটেজের খোলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে সাজেকের মেঘ দেখা সৌভাগ্য পেতে চাই অনেকেই জুমঘর ইকো রিসোর্টে থাকার জন্য মোট ছয়টি কোর্ট রয়েছে। এবং প্রতিটি কক্ষে সর্বোচ্চ চারজন থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এদের মধ্যে ২ টি কটেজ চারকোণা‌ এবং চারটি কটেজ গোলাকার। চারকোনা ঘর গুলোতে পাঁচজন থাকতে পারবেন। এই রিসোর্ট এর প্রতি কক্ষের ভাড়া রাতপ্রতি ৩০০০- ৩৫০০ টাকা।

জুমঘর রিসোর্টে বুকিং করতে যোগাযোগ করুন- ০১৮৮৪-২০৮০৬০

ছায়ানীড় ইকো রিসোর্ট (Chayanir Eco Resort)

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ এ সূর্যাস্তের মনোরম দৃশ্য এবং বিস্মিত পাহাড়ি রাশির সৌন্দর্য উপভোগ করতে সেরা একটি রিসোর্ট হলো ছায়ানীড় ইকো রিসোর্ট। এই রিসোর্টে তিনটি কাপল কাম ডাবল কটেজ রয়েছে। প্রতি রুমে ৪ জন করে সর্বমোট ১২ জন এই রিসোর্টে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতি রুমে একটি করে বেড এবং একটি ফ্লোরিং বেড এর ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে দুইজন দুইজন করে চারজন থাকতে পারে। একটি প্রিমিয়াম রুম ও দুইটি রেগুলার রুম। প্রিমিয়াম রুম নান্দনিক পিরামিড ডিজাইন করা এবং রুম এর স্পেস অন্য দুটি রুম থেকে বড়। এই রিসোর্টে রেগুলার রুম ভাড়া ৩০০০ টাকা প্রতিরাত এবং প্রিমিয়াম রুম ভাড়া ৩৫০০ টাকা।

সাজেক ভ্রমণ এ ছায়ানীড় ইকো রিসোর্টে বুকিং করতে যোগাযোগ করুন- ০১৮৮১১৬৪৮৬৪

লুসাই কটেজ (TGB Lushai Cottage)

সাজেক ভ্যালির সুন্দরতম ভিউ এর জন্য লুসাই কটেজ একটি আদর্শ থাকার জায়গা। এর রুমগুলো সুন্দরভাবে ডেকোরেশন করা। কাপল, ফ্যামিলি কিংবা বন্ধুদের গ্রুপের জন্য রয়েছে বিভিন্ন ক্যাটাগরির রুম। লুসাই কটেজের রুমগুলো ভাড়া রুমভেদে ২৫০০ থেকে ৪৫০০ টাকা হয়ে থাকে।

লুসাই কটেজে বুকিং করতে যোগাযোগ করুন- ০১৬৩৪-১৯৮০০৫

কম খরচে থাকার কিছু রিসোর্ট

ইমানুয়েল রিসোর্ট (Emanuel Resort)

এই রিসোর্টে মোট ৮ টি রুম আছে এই রিসোর্ট টি একটি সাধারণ রিসোর্ট। পরিবারের জন্য এই রিসোর্ট টি আদর্শ নয় এবং এটি ফিমেল ফ্রেন্ডলিও না। তবে বন্ধু বান্ধবের জন্য এবং যারা কম খরচে কোন অভিযোগ ছাড়াই সাজেক ভ্রমণ করতে চায় তারা এই রিসোর্টটি বাছাই করতে পারেন। রিসোর্টের মূল সমস্যা হচ্ছে সবগুলো রুমের কমন বাথ।

ইমানুয়েল রিসোর্টে বুকিং করতে যোগাযোগ করুন- ০১৮৬৫-৩৪৯১৩০/০১৮৬৯৪৯০৮৬৮

আলো রিসোর্ট (Alo Resort)

সাজাক ভ্রমন কারীদের থাকার জন্য প্রথম রিসোর্ট হিসেবে গড়ে ওঠে আলো রিসোর্ট। এই রিসোর্ট টি রুইলুই পাড়ায় অবস্থিত। এখান থেকে আপনি সাজেকের প্রাকৃতিক ভিউ তেমন পাবেন না। তবে কম খরচে থাকার জন্য এটি পর্যটকদের সেরা একটি অপশন। আলুর রিসোর্টে মোট ছয়টি রুম রয়েছে। এখানে ৪ টি ডাবল রুম ও ২ টি সিঙ্গেল রুম। আলো রিসোর্টের এসব রুমে ভাড়া পড়বে ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত।

আলো রিসোর্টে বুকিং করতে যোগাযোগ করতে পারেন- ০১৮২০-৭৪৭৬৫৫/১০৮৬৩-৯০০৬০৯

সারা রিসোর্ট (Sara Resort)

এই রিসোর্ট টি রুইলুই পাড়ায় অবস্থিত। রুইলুই পাড়ার কারবারি মনা ভাই- এই রিসোর্টের মালিক। একটি এখানে মোট চারটি কক্ষ আছে। তিনটি কক্ষে অ্যাটাচ বাথ ও একটি কমন বাথ রয়েছে। প্রতি রুমে একটি করে খাট আছে, যেখানে সর্বোচ্চ দুইজন থাকা যাবে। রুমগুলো তুলনামূলক ছোট এবং টিনের তৈরি। রিসোর্টে সোলার ব্যবস্থা আছে। এই রিসোর্ট এর ভাড়া তুলনামূলক কম।

সারা রিসোর্টে বুকিং করতে যোগাযোগ করুন- ০১৫৫৪-৫৩৪৫০৭

পাহাড়িকা রিসোর্ট (Paharika Resort)

কম বাজেটের মধ্যে এটি একটি ভালো রিসোর্ট। এই রিসোর্টে মোট ১২ টি রুম রয়েছে। প্রতি রুমের ভাড়া হবে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। রুম অনুযায়ী এর থেকে বেশি ভাড়ায় যাওয়া উচিত নয়।

পাহাড়িকা রিসোর্ট বুকিং করতে যোগাযোগ করুন- ০১৭২৪-৬৫৮৭৬৬/০১৮৭১-৭৭১৭৭৭

আদিবাসী ঘর

সাজেক ভ্রমণ এ সবচেয়ে কম খরচে থাকতে চাইলে আদিবাসী ঘরে যেতে পারেন। সেখানে জনপ্রতি ভাড়া ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বন্ধুবান্ধব মিলে স্বল্প খরচ এখানে কাটিয়ে দিতে পারেন তবে ফ্যামিলির সাথে গেলে এটা অবশ্যই বাছাই করা উচিত নয়

সাজেকে খাবারের ব্যবস্থা

সাজেকের সব রিসোর্ট গুলোতেই ভালো খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে। পূর্বেই খাবারের ব্যাপারে বলে রাখলে আপনার পছন্দমতো রান্না করে দেওয়া হবে। সেখানে প্রতিবেলায় ১ জন পর্যটকের খাবারের জন্য ১০০-২৫০ টাকা খরচ হতে পারে। এমনিতে সবসময় খাবারের মেনুতে পাবেন- ভাত, মুরগীর মাংস, আলুর ভর্তা, সবজি এই ধরনের খাবারগুলো। এছাড়াও সাজেকে বেশ কিছু হোটেল রয়েছে। আপনি চাইলে হোটেল কিংবা রিসোর্টে রাতে বার বি কিউও করতে পারবেন।

এছাড়াও সাজেক ভ্রমণ এ আদিবাসীদের ঘরে খাবার খেতে পারেন। সেক্ষেত্রে পূর্বেই বলে রাখতে হবে আপনি কি খেতে চান। সাজেকে পাহাড়ি এলাকার পেঁপে, আনারস, কলা ইত্যাদি ফল পাবেন স্বল্প মূল্যেই। পাহাড়ি সে সকল ফলের স্বাদ নিতে ভূলবেন না।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ

মৌসুমী সময়ে ও ছুটির দিনগুলোতে সাজেক ভ্রমণ খরচ কিছুটা বেশি হয়। ভ্রমনে গ্রুপ যত বড় হবে খরচ খরচ তত কমানো যেতে পারে। তাও, সাজেক ভ্যালির আনুমানিক ভ্রমন খরচ – জিপ ভাড়া (১০-১২ জনের) ৮ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা, প্রতিবেলা ১ জনের খাবার খরচ ১৫০-২০০ টাকা। এছাড়াও বিভিন্ন এন্ট্রি ফি ও জিপ পার্কিং সম্পর্কিত খরচ জনপ্রতি ১৫০ টাকা। কটেজ ভাড়ার ক্ষেত্রে জনপ্রতি সাধারনভাবে ৫০০ টাকা। এভাবেই আপনার ১ দিন বা ২ দিন ভেদে খরচ কম বেশি হবে।

তবে বর্ষাকালে সাজেকের ভ্রমন খরচ কম হয়, ভিড় কম থাকে এবং মেঘও বেশি দেখা যায়। তবে রাস্তা চলাচলে কিছুটা সমস্যা হয়।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ টিপস

সাজেকে যাবার পথ আঁকাবাঁকা ও উঁচু-নিচু তাই এখানে ভ্রমনের পথ কিছুটা বিপজ্জনক। জীপের ছাদে ভ্রমন করা থেকে বিরত থাকুন।
সাজেকের বেশিরভাগ স্থানে ও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই এবং সোলার পাওয়ার ব্যবহার করে। তাই মোবাইলের জন্য পাওয়ার ব্যাংক রাখতে পারেন।
সাজেকে রবি, এয়ারটেল ও টেলিটকের নেটওয়ার্কই ভালো পাওয়া যায়।
আদিবাসীদের ছবি তোলার পূর্বে অনুমতি নিয়ে নিন। এটি আপনার ব্যাসিক ম্যানারকে রিপ্রেজেন্ট করে।
আদিবাসীদের প্রতি ও তাদের কালচারের প্রতি সম্মান দেখান। অপছন্দনীয় কিছু হলে সে স্থান থেকে চলে আসতে পারেন।
যাবার পথে নিরাপত্তা বাহিনীর ভ্রমনকারীর তথ্য জমা দিতে হয়। তাই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি সাথেই রাখুন।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত প্রশ্নোত্তর (FAQ’s)

সাজেক ভ্রমণের সেরা সময় কোনটি?

বর্ষার শেষে এবং শীতের পূর্বে আগস্ট- নভেম্বর মাসে (শরৎ ও হেমন্তে) সাজেক ভ্রমণ এর জন্য সেরা সময়। তখন মেঘেদের উড়োউড়ি খেলা সবচেয়ে বেশি উপভোগ করা যায়। এছাড়াও যেকোন সময়েই সাজেক ভ্রমণে যেতে পারেন।

সাজেকে সেনাবাহিনীর এসকোর্ট কখন শুরু হয়?

দিঘীনালা এলাকা থেকে সকাল ১০ টা এবং বিকাল ৩ টায় সেনাবাহিনীর এসকোর্ট শুরু হয়। সাজেক থেকে আসার সময়ও একই সময় এসকোর্ট শুরু হয়। এসকোর্ট ছাড়া একা যাওয়া যায় না। তাই বিকাল ৩ টার এসকোর্ট মিস করলে সেদিন আর যেতে পারবেন না।

সাজেকে নিজস্ব গাড়ি বা বাইক নিয়ে যাওয়া যায়?

হ্যাঁ সাজেক ভ্যালি তে গাড়ি বা বাইক নিয়ে যাওয়া যায়। তবে, আপিনার যদি পাহাড়ি এলাকায় গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা থাকে সেক্ষেত্রেই যেতে পারেন। অন্যথায়, আঁকাবাঁকা পথে বিপদ হতে পারে। বাইকের জন্যও রাস্তা তেমন উপযোগী নয়। এছাড়া খাগড়াছড়ির পর থেকে কোন ফিলিং স্টেশন পাবেন না।