ভ্রমণে সুস্থ থাকতে করনীয়

আমাদের আজকের আলোচনা ভ্রমণে সুস্থ থাকতে করনীয় সম্পর্কে: আমরা ছুটির দিনে কিংবা বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজকর্মে বেড়াতে যেতে অথবা দর্শনীয় স্থান উপভোগ করতে ভ্রমণ করে থাকি। এই সময় সুস্থ থাকাটা আবশ্যক, শরীর সুস্থ না থাকলে ভ্রমনের আনন্দই নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের আজকের আলোচনা ভ্রমণে সুস্থ থাকতে করনীয় নিয়ে। যেকোনো ধরনের শিক্ষা সফর প্রয়োজনীয় ভ্রমন বা আনন্দ ভ্রমণ শুধু সামান্য অসুস্থতার জন্য বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। অথচ একটু সাবধানতা অবলম্বন করলে আমাদের ভ্রমনের সময় সুস্থ থাকা সম্ভব।

ভ্রমনের পূর্বে  মনে রাখা প্রয়োজন   

১. সর্ব প্রথম আপনি যদি নিয়মিত কোন ঔষধ সেবন করে থাকেন, তা সঙ্গে নিন এবং কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন। যেমন—অ্যান্টিহিস্টামিন, প্যারাসিটামল, অ্যান্টাসিড ইত্যাদি ও চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র থাকলে সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।

২. নিরাপদ পানি ও শুকনো খাবার সাথে নিন, যাতে বাইরের খোলা খাবার খেয়ে পেট ব্যথা জনিত এসিডিটি সমস্যায় পড়তে না হয়। সাথে করে ওরস্যালাইন নিতে পারেন।

৩. আপনার অ্যালার্জি জনিত সমস্যা থাকলে ধুলোবালিতে ক্ষতি হতে পারে, তাই নিরাপদ যানবাহনে ভ্রমণ করাই ভালো।

৪. যদি তা সম্ভব না হয় ধুলা-বালি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন, মাক্স ব্যবহার করুন, গনগন হাত মুখ পানি দিয়ে ধৌত করুন।

৫. ভ্রমনে গাড়িতে চড়লে যাঁদের মাথা ব্যথা হয় অথবা মাইগ্রেনজাতীয় মাথাব্যথা আছে, তাঁরা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সঙ্গে রাখবেন এবং চশমা ব্যবহার করবেন।

৬. ভ্রমনের সময় আপনার সাথে ছোট শিশু থাকলে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।

৭.  শিশুদের ত্বক ও শরীর বেশি নাজুক তাই শিশুরা অসুস্থ্য হওয়ার প্রবনতা বেশি থাকে। সেদিকে নজর রাখা একান্ত আবশ্যক।

৮. শুদের ধুরে কোথাও ভ্রমনে নিয়ে যেতে হলে পূর্ব পরিকল্পনা করুন। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কাপড় ও প্রয়োজনীয় ওষুধ সাথে নিন।

৯. আপনার পরিচিত কোন ডাক্তারের মোবাইল নম্বর সঙ্গে রাখুন। ভ্রমনে শিশু অসুস্থ হলে অবহেলা করবেন না, প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।

১০. শিশুদের বাইরের হোটেলের খাবার খাওয়ানোর ব্যাপারে সচেতন থাকুন। সম্ভব হলে শিশুর খাবার সাথে নিয়ে যাবেন।

আরও পড়তে পারেন: আজকের ট্রেনের সময়সূচী

গরমের দিনে ভ্রমন

গরমের দিনে ভ্রমন করলে বেশি করে পানি পান করুন, লেবুর শরবত, ডাব,  অরস্যালাইন ও ফলমুল খাবেন। একটু সতর্কতা অবলম্ভন করে ভ্রমণ করলেই তা আপনার জন্য আনন্দদায়ক হবে।

ভ্রমণে সুস্থ থাকতে করনীয় নিয়ে আমাদের আলোচনা
ভ্রমণে সুস্থ থাকতে করনীয়

গরমের সময় ভ্রমণে সুস্থ থাকতে করনীয় –

  • প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। প্রতিদিন ৪-৫ লিটার পানি পান করুন।
  • বাইরের ভাঁজাপোড়া এবং মশলাযুক্ত খাবার যতোটা সম্ভব না খাওয়াই ভালো।
  • অরস্যালাইন, ডাবের পানি, লেবুর শরবত এবং গ্লুকোজ বেশি বেশি পান করুন। ফলে শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া ঘামের কারনে পানির চাহিদা পূরণ হবে।
  • নিরাপদ পানির বোতল সাথে রাখুন সব সময়। বাহিরে গেলে ছাতা ব্যবহার করুন।
  • বাহিরে যাতায়াতের জন্য আরামদায়ক কাপড় যেমন সুতি ও হালকা রং পোশাক পরিধান করুন। এতে আপনি সারাদিন আরাম এবং স্বস্তি পাবেন। কালো রঙের কাপড় ব্যবহার না করাই ভালো ।
  • নিয়মিত গোসল করুন।
  • অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
  • পরিমাণমত চা-কপি পান করুন, অতিরিক্ত চা কফি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
  • প্রচন্ড রোদে ভ্রমনের পর ফ্রিজের ঠান্ডা কোল্ড ড্রিংস ও ঠান্ডা পানি খাওয়া যাবেনা।
  • গরমের সময় খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন- চিড়া, দই, কলা,রুটি, সিদ্ধ ডিম, ব্রেড ও সবজি।
  • অনেক সময় গরম থেকে সর্দি কাশি হতে পারে, সর্দি, কাশি হলে ভিটামিন সি জাতীয় খাবার যেমন: কমলা, মাল্টা, আনারস, পেয়ারা বেশি খেতে হবে।
  • অবশ্যই মাক্স ব্যবহার করুন।

শীতকালীন ভ্রমণের প্রস্তুতি নেবেন যেভাবে

শীতকালে স্বাস্থ্য সমস্যার প্রবণতা ব্যাপকভাবে দেখা দেয়। ভাইরাল ফ্লু, সর্দি, কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা, অ্যালার্জি ইত্যাদি হলো শীতের খুব সাধারণ অসুক। তাই আনন্দ-উৎসবের সাথে সাথে এই সময় আমাদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

 শীতকালে ভ্রমণে সুস্থ থাকতে করনীয়

  • শীতকালে মোটা কাপড়ের তৈরি জামা পরিধান করুন। তবে মনে রাখবেন শীতের জামার ওজন যত কম হবে তত ভালো।
  • শীতের সব ধরনের জামা-কাপড় সাথে নিতে হবে। যাতে করে ঠান্ডা না লাগে।
  • শীতকালে জলবায়ু রুক্ষ ও শুষ্ক থাকে এবং এ সময় আমাদের ত্বক ফাটে। তাই ত্বক ভালো রাখতে দিনে অন্তত ৫ থেকে ৬ লিটার পানি পান করতে হবে।
  • শীতকালে আমরা বেশি অলসতা ও নিদ্রাহীনতা অনুভব করি। তাই শীতকালে সঠিক সময়ে নিদ্রার প্রয়োজন, তাতে করে সতেজ এবং চাপমুক্ত থাকা যায়।
  • সম্ভব হলে প্রয়োজনমতো medicine সাথে রাখুন। জ্বর, পেট ব্যথা, অ্যাসিডিটি, বমি, মাথা ব্যথার ওষুধ নিয়ে নিন। এগুলো সঙ্গে থাকলে অনেক সময় বড় ধরনের বিপদ থেকেও রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
  • যাত্রাপথে বমি সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগেন অনেকে। এ সমস্যা বমি প্রতিরোধের জন্য ওষুধ সেবন করতে পারেন। যাঁদের এমন সমস্যা রয়েছে, তাঁরা ভ্রমনের সময় বই পড়া এবং ফোনের দিকে তাকিয়ে থাকা থেকে বিরত থাকুন বরং প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে পারেন। সবচেয়ে ভালো ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারেন।

আপনার ভ্রমন হোক আনন্দদায়ক ও নিরাপদ।